চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের শহীদ মিনার এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রেখেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ওই এলাকার বাসিন্দারা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। প্রশাসন বলছে, একটি গ্রামের রাস্তা নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের বিরোধের জের ধরে এ অবরোধ করা হয়। পরে বেলা পৌনে দুইটার দিকে প্রশাসনের আশ্বাসে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা। অবরোধের ফলে মহাসড়কের উভয় দিকে অন্তত ৩০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বেলা ১১টার দিকে সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য এসে সড়কের মাঝখানে বাঁশ দিয়ে খুঁটি গেড়ে দেন। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। দুপুর ১২টার দিকে শত শত নারী-পুরুষ মহাসড়কে অবস্থান নেন। এরপর যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন চন্দ্র ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের অবরোধ অব্যাহত রাখেন। খবর পেয়ে দুপুরের দিকে সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থলে এসে সমস্যাটি সমাধানের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন।
সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় বাসিন্দারা সড়কটি তাঁদের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখার জন্য আবেদন করেন। গতকাল সোমবার স্থানীয় বাসিন্দা ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছিলেন। সেনাবাহিনী থেকে একটা বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা সেটি মেনে নেননি।
সহকারী কমিশনার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মহাসড়ক অবরোধের পর তিনি এসে বিষয়টি সমাধান করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের আশ্বাস দেন। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা সমাধানের বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
এ নিয়ে পরপর তিন দিন একই সময়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় মহাসড়কে চলাচলকারীদের মধ্যে একরকম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে গত রবি ও সোমবার মহাসড়কের এলাকায় ছয় দফা দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা। তিন দিনের মহাসড়ক অবরোধে যানজটে আটকা পড়ে নিত্যদিনের যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এদিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাইওয়ে পুলিশকেও।
হাইওয়ে পুলিশের ওসি খোকন চন্দ্র ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, আজ পৌনে দুই ঘণ্টার অবরোধের কারণে যানজট অন্তত ৩০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়। এ যানজট মুক্ত করতে তাঁদের সারা দিন লেগে যাবে বলে জানান তিনি।