পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আবদুল্লাহ আল মামুন নামের এক সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিককে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আবদুল্লাহ আল মামুন দৈনিক নয়া শতাব্দীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম-আহ্বায়ক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় গতকাল রাতে তিনি পাবনা সদর থানায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করেছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব একটি সংবাদবিজ্ঞপ্তি দেয়। এতে স্বাক্ষর করেন প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব দুর্জয় কুমার। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দুর্জয় কুমারকে ক্যাফেটেরিয়ায় আটকে রাখে। খবর পেয়ে আবদুল্লাহ আল মামুন তাঁকে উদ্ধার করতে ক্যাফেটেরিয়ায় যান। এ সময় তাঁকে আটকে বেধড়ক মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে সহপাঠীরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
অভিযোগে আবদুল্লাহ আল মামুনের দাবি, মারপিটের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মাসুদ রানা সরকার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ও সাবেক প্রচার সম্পাদক ইকরামুল ইসলাম। তাঁদের সঙ্গে ছাত্রলীগের আরও ২০ থেকে ২৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে মাসুদ রানা সরকার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আমরা কাউকে মারধর করিনি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন নিয়ে আমরা প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। কীভাবে, কাদের নিয়ে কমিটি গঠন হবে, এসব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘শুধু আবদুল্লাহ আল মামুন নয়, ঘটনায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাঁরা সাংবাদিকতা করি, সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কামাল হোসেন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগটি পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ‘আমরাও একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমি নিজে বিষয়টি তদন্ত করছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মামুনকে মারধরের ঘটনায় পাঁচ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর। আজ সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিতে প্রক্টর কামাল হোসেনকে আহ্বায়ক ও রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রতন কুমার পালকে সদস্যসচিব করা হয়েছে।