প্রথম আলো এযাবৎকালে যতটি স্লোগান দিয়েছে, তার প্রতিটিই বাস্তবসম্মত। এবারও যে স্লোগান তারা তুলেছে, ‘জেগেছে বাংলাদেশ’—এটা বাস্তবে রূপ লাভ করবে। কারণ, প্রথম আলো শুধু খবর পরিবেশনই করে না, ভবিষ্যৎ পথও দেখায়। এ জন্যই শত বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে ২৬ বছর ধরে পত্রিকাটি দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম।
প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনাজপুরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথিরা এসব কথা বলেন। আজ শুক্রবার সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘জেগেছে বাংলাদেশ’ স্লোগান সামনে রেখে একইভাবে চাঁদপুর, সাতক্ষীরা, শেরপুর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, কক্সবাজার, নড়াইল, শরীয়তপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, সুনামগঞ্জ, ভৈরব, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপিত হয়েছে। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এসব অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতা করেন বন্ধুসভার সদস্যরা।
দিনাজপুরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জলিল আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ওয়াদুদ মণ্ডল, দিনাজপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম, সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক নুরে আলম, জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক শাহজাহান সাজু, ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডিসি রায়, জেলা কালচারাল অফিসার মীন আরা পারভীন, প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বরূপ বকসী, স্টেশনসুপার জিয়াউর রহমান, সদর রেঞ্জের বন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান, আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ কুমার, তাপস পাল, সাংবাদিক মোরশেদুল ইসলাম, একরাম তালুকদার, মোফাচ্ছিরুল রাশেদ, ফখরুল ইসলাম, প্রথম আলোর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ইমরান আলী প্রমুখ।
দিনাজপুর বন্ধুসভার বন্ধু শবনম মুস্তারিন ও সুব্রত সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর দিনাজপুর প্রতিনিধি রাজিউল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে ছিল বন্ধুসভার বন্ধুদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। বন্ধুদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুনিরা শাহনাজ চৌধুরী, শুভ রায়, সাব্বির হোসেন, সুদর্শন অধিকারী, বেলালুর রহমান, বিরষ রায়, সজীব আহমেদ, ঈশান কর্মকার, বীথি, মলি, শুভজিৎ, বিপ্লব, জাহিন, বিধান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জলিল আহমেদ বলেন, ‘২৬ বছর ধরে প্রথম আলোর সঙ্গে আছি। এই বয়সেও প্রতিদিন পত্রিকাটির পাতা ওল্টালে মনে হয় সারা দিনে কী যেন অসমাপ্ত থেকে গেল। সাম্প্রতিককালে যে গণ–অভ্যুত্থান হলো, ইন্টারনেট বন্ধ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও কিছু জানা যাচ্ছে না, তখনো প্রথম আলো আমার একমাত্র ভরসার জায়গা ছিল।’ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ওয়াদুদ মণ্ডল বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে একজন গৃহিণী—প্রায় সবার আস্থার জায়গা হয়েছে প্রথম আলো। খবরের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। প্রথমা প্রকাশনের যে বইগুলো এই মুহূর্তে সবচেয়ে উপযোগী ও সুন্দর—এই বইয়ের প্রকাশকও প্রথম আলো।’
চাঁদপুর শহরের বড়স্টেশন মোলহেডে আজ সকালে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বন্ধুসভা। সেখানে বক্তারা বলেন, প্রথম আলোর কাছে দুটি অস্ত্র আছে। একটি হলো তার কলম, আরেকটি হলো তার পাঠক। এ দুটি অস্ত্র নিয়ে দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে প্রথম আলো এ দেশের অপশক্তির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে। ‘জেগেছে বাংলাদেশ’ স্লোগানে আগামী দিনেও এভাবে লড়ে যাবে প্রথম আলো।
প্রথম আলোর চাঁদপুর বন্ধুসভার সভাপতি রিফাত কান্তি সেন ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাছানের সঞ্চালনায় এ সময় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর চাঁদপুর প্রতিনিধি আলম পলাশ। অতিথিদের মধ্যে চাঁদপুর আক্কাস আলী রেলওয়ে একাডেমি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গোফরান হোসেন, চাঁদপুর ষোলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তফা কামাল, চাঁদপুর মডার্ন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ওমর ফারুক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এর আগে বড়স্টেশন মেঘনাপারে শহরের ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০০ শিশু শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিন বিভাগের ৫ জন করে ১৫ জনকে সনদ ও পুরস্কার হিসেবে বই উপহার দেওয়া হয়। এ ছাড়া নদীপারের ছিন্নমূল শিক্ষাবঞ্চিত ৫০ জন শিশুকে পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়।
সঠিক পথে থাকতে, সত্য প্রকাশ করতে কঠিন ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়। ভয়ভীতি উপেক্ষা করেও সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে অবিচল থেকেছে প্রথম আলো। দেশের সাধারণ মানুষের পাশে অবস্থান নিয়ে তাদের আস্থা অর্জন করতে সমর্থ হয়েছে। ক্ষমতাবানদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে পেশাদারত্ব, সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে প্রাধান্য দিয়েছে। এ জন্য প্রথম আলো দিনে দিনে হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর, সাধারণ মানুষের আস্থার স্থল।
প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাতক্ষীরায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সাতক্ষীরা জেলার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা কিশোরীমহন সরকার। আজ সকালে সাতক্ষীরার শহীদ নাজমুল সরণির ম্যানগ্রোভ সভাঘর মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সাতক্ষীরা বন্ধুসভা।
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুভাষ সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল হামিদ, দেবহাটা খানবাহদুর আহসান উল্লাহ সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পবিত্রমোহন দাশ, কবি স ম তুহিন, বন্ধুসভার উপদেষ্টা জাহিদা জাহান, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ, সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সদস্যসচিব আলী নূর খান, সাংবাদিক রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, কামরুজ্জামান, আবদুল ওয়ারেশ খান চৌধুরী, উদীচী সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান ও প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি। বন্ধুসভার সদস্য মো. সালাউদ্দিনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা বন্ধুসভার সভাপতি কর্ণ বিশ্বাস। অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন বন্ধুসভা সাতক্ষীরার সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক সোমা রানী বৈদ্য ও মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক সবুজ তরফদার।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল হামিদ বলেন, প্রথম আলো এমন একটি পত্রিকা, যা না পড়লে দেশ-বিশেদের প্রকৃত হালচাল জানা যায় না। বর্তমান সময়ে প্রথম আলো দেশের মানুষের পাশে থেকে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিগত সরকারের অন্যায়, অত্যাচার, দুর্নীতি ও অনিয়ম তুলে ধরার কারণে তাদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে আবার একটি গোষ্ঠীর চক্ষুশূল হয়ে উঠেছে প্রথম আলো। এটা থেকেই বোঝা যায় প্রথম আলো সাধারণের পত্রিকা। বাংলাদেশের উন্নয়নে এক অগ্রণী পত্রিকা।
প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শেরপুরের পাতাবাহার খেলাঘর আসর মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বন্ধুসভার সদস্যরা। আলোচনায় অংশ নেন শেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবদুর রশীদ, শেরপুর ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি রাজিয়া সামাদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) শেরপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. শওকত আলী, শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল আলীম তালুকদার, জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যসচিব এ এইচ নূরে আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর শেরপুর প্রতিনিধি দেবাশীষ সাহা রায়। এ ছাড়া শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কাঁকন রেজা, নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ শেরপুরের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, শিক্ষক আবু হান্নান, তরুণ আইটি উদ্যোক্তা সঞ্জয় বণিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ মো. আবদুর রশীদ বলেন, সকল বাধা পেরিয়ে প্রথম আলো তার আদর্শে অবিচল থেকে দুই যুগের বেশি সময় ধরে সত্য তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে সমাজকে আলোকিত করে দেওয়ার কাজটি করে যাচ্ছে। এখন প্রথম আলোর কাছে প্রত্যাশা, বাংলাদেশের বর্তমান প্রজন্মকে এগিয়ে নিতে প্রথম আলো তার সবকিছু উজাড় করে দেবে।
আলোচনা শেষে পাতাবাহার খেলাঘর আসরের শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শেরপুর বন্ধুসভার উপদেষ্টা মলয় চাকী।
সিরাজগঞ্জের চাঁদপাল এলাকায় আয়শা রশিদ বিদ্যানিকেতন মিলনায়তনে আজ সকালে কেক কাটা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বর্ণাঢ্য আয়োজন করে বন্ধুসভা। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শুধু বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা নয়, সমাজ পরিবর্তনের জন্যও কাজ করে প্রথম আলো। প্রথম আলো কখনোই পেশাদারত্বের সঙ্গে আপস করেনি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সৎ, সাহসী ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করে চলেছে। এ কারণেই প্রথম আলো কখনোই ক্ষমতাবানদের কাছে প্রিয়ভাজন হতে পারেনি। তবে প্রথম আলো হয়ে উঠেছে গণমানুষের কণ্ঠস্বর।
সিরাজগঞ্জ বন্ধুসভার সভাপতি প্রদীপ সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক আসলাম হোসেন, আয়শা রশিদ বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক উদয় পাল, সিরাজগঞ্জ নজরুল একাডেমির সভাপতি হেলাল আহমেদ, জ্ঞানদায়িনী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন। সিরাজগঞ্জ বন্ধুসভার উপদেষ্টা আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি আরিফুল গণি।
আয়শা রশিদ বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক উদয় পাল বলেন, ‘গণমানুষের কণ্ঠস্বর প্রথম আলো শুধু সংবাদই পরিবেশন করে না, তারা সমাজের ভালো কাজও করে। তার প্রমাণ আজ আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে কবিতা আবৃত্তি ও একক নৃত্য প্রতিযোগিতার এই আয়োজন। তৃণমূল পর্যায়ে তাদের এই আয়োজন আমাকে সত্যিই খুব মুগ্ধ করেছে।’
অনুষ্ঠানের একটি পর্বে সিরাজগঞ্জ বন্ধুসভার বন্ধু আশীষ বিপ্লবের নেতৃত্বে বন্ধুরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। পরে অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হয়।
প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পাবনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, প্রথম আলো দেশের কথা বলে, মানুষের কথা বলে। সুন্দরকে সুন্দর আর অসুন্দরকে সুন্দর বলে। তাই প্রথম আলোর শত্রুর যেমন অভাব নেই, তেমন বন্ধুরও অভাব নেই।
আজ শুক্রবার বিকেলে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রবীণ চিকিৎসক ও অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন সরওয়ার জাহান, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান, পাবনা সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও লেখক আখতার জামান, নাট্য অভিনেতা রাজিউর রহমান প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর পাবনা প্রতিনিধি সরোয়ার মোর্শেদ।
চিকিৎসক সরওয়ার জাহান বলেন, ‘২৬ বছর আগে প্রথম আলো নতুন সূর্যের মতো উদিত হয়েছিল। সেই সূর্য এখনো আলো দিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও আলো দেবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।’
কক্সবাজারে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন শিক্ষক-চিকিৎসক, আইনজীবী, কবি-সাহিত্যিক, পরিবেশ, মানবাধিকার ও সমাজকর্মী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী, পত্রিকার হকাররা। বন্ধুসভার সহযোগিতায় আজ শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজার প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার সাহস রাখে বলেই প্রথম আলো আজ দেশের শীর্ষ দৈনিক, সব শ্রেণিপেশার মানুষের প্রিয় পত্রিকা হতে পেরেছে। যত বাধাবিপত্তি আসুক না কেন, প্রথম আলো তাঁর নীতি থেকে বিন্দুমাত্র পিছপা হবে না; ভয়-শঙ্কা, হামলা, মামলাকে তুচ্ছ ভেবে প্রথম আলো সব সময় সত্য বলে যাবে, ন্যায়ের পথে অবিচল থাকবে—পাঠক হিসেবে প্রথম আলোর কাছে চাওয়া এটুকুই।
কক্সবাজার বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ ও প্রবীণ শিক্ষক এম এম সিরাজুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন, হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স ফোরাম কক্সবাজারের সভাপতি আবদুস শুক্কুর, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ফরিদ আহমদ, কবি ও সাহিত্যিক শামীম আক্তার, কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদ সভাপতি দীপক শর্মা প্রমুখ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলো কক্সবাজারের নিজস্ব প্রতিবেদক আবদুল কুদ্দুস।
প্রথম আলোর একনিষ্ঠ পাঠক হওয়ার কথা উল্লেখ করে শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বলেন, প্রভাবশালী মহলে রোষানলে পড়ে কখনো প্রথম আলো নতিস্বীকার করেনি। ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে দেশের মানুষকে সত্যটা জানানোর চেষ্টা চালিয়েছে। এখনো রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে। যে কারণে প্রথম আলো দেশের শীর্ষ দৈনিক, সব শ্রেণি–পেশার মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার দৈনিক হতে পেরেছে।
কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন বলেন, কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রথম আলোর পথচলা। সত্য বলতে গিয়ে অনেকের বিরাগভাজন হতে হয়। কিন্তু তাতে সাহস হারিয়ে ফেললে চলবে না।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বন্ধুসভার সাংগঠনিক সম্পাদক উলফাতুল মোস্তফা। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশ ও কবিতা আবৃত্তি করেন বন্ধুসভার সদস্য পূর্ণিতা বড়ুয়া, অর্পিতা দে ও কুলচুমা ইয়াছমিন।
নড়াইলে প্রথম আলোর ২৬তম বর্ষপূর্তি উদ্যাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় শহরের চৌরাস্তা এলাকায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে। আজ শুক্রবার বিকেলে সেখানে কেককাটা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন করেন বন্ধুসভার সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, প্রথম আলোর জনপ্রিয়তার কারণ সব সময় সত্যের সঙ্গে থাকার চেষ্টা ও ভুয়া তথ্য প্রচার না করা। তা ছাড়া বিগত সরকার ও বিভিন্ন সেক্টরের দালালি করেছে অনেক মিডিয়া। কিন্তু প্রথম আলো কারও থেকে সুবিধা নেয়নি, কাউকে ছাড়ও দেয়নি। এ কারণে ক্ষমতায় যারাই থেকেছে, তারাই প্রথম আলোকে শত্রুর মতো দেখেছে।
নড়াইল বন্ধুসভার উপদেষ্টা শুভ সরকারের সঞ্চালনায় অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন নড়াইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মির্জা নজরুল ইসলাম, মানবাধিকারকর্মী কাজী হাফিজুর রহমান, নড়াইল জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তারিকুজ্জামান, শিব শংকর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিসকাত শরীফ, সাংস্কৃতিক কর্মী মুন্সী আসাদুর রহমান, সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম, নড়াইল বন্ধুসভার সভাপতি শামীম আহমেদ প্রমুখ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন নড়াইল বন্ধুসভার উপদেষ্টা শুভ সরকার এবং সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সবুজ সুলতান।
প্রথম আলো পাঠকদের অনুপ্রেরণা পেয়ে সমাজবদলের গল্প রচনা করে যাচ্ছে। জাতির সংকটময় মুহূর্তে একটি গণমাধ্যম কত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, তা দেখিয়েছে প্রথম আলো। সাহস, সৎ ও নির্ভীক সাংবাদিকতায় প্রথম আলো কোটি পাঠকের মন জয় করেছে।
শরীয়তপুরে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আজ বিকেলে প্রথম আলো বন্ধুসভা আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, আইনজীবী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, পরিবেশবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
শরীয়তপুর বন্ধুসভার সভাপতি সেলিম ঢালীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শহরের পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক বিজয় কৃষ্ণ পাল, জেলা কেন্দ্রীয় মন্দিরের সভাপতি অনিক ঘটক চৌধুরী, শরীয়তপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাহিন সরকার, কবি শ্যাম সুন্দর দেবনাথ, প্রথম আলোর প্রতিনিধি সত্যজিৎ ঘোষ প্রমুখ।
বিজয় কৃষ্ণ পাল তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘প্রথম আলো দীর্ঘ সময় ধরে সমাজসংস্কারের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তারা দুঃসাহসিকভাবে একটি জাতি ও সমাজকে বদলে যাওয়ার কথা বলে যাচ্ছে। এমন কাজ করতে গিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জ ও বিড়ম্বনা এলেও পাঠকের ভালোবাসায় তা উত্তরণ ঘটাতে পেরেছে।’
অনুষ্ঠানে বন্ধুসভার বন্ধুরা সংগীত ও শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যশিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন। এর আগে শহরের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন বন্ধুসভার সদস্যরা। অনুষ্ঠানে প্রতিযোগীদের মধ্যমে ২০ জনকে বই ও শুভেচ্ছাপত্র তুলে দেওয়া হয়।
প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মানিকগঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সর্বদা সত্য প্রকাশে দৃঢ় ভূমিকা পালন করে আসছে প্রথম আলো। এ জন্যই প্রথম আলো সবার চেয়ে আলাদা। ছাত্র-জনতার বিপ্লবেও প্রথম আলো সাহসী ভূমিকা পালন করেছে। আমরা চাই আগামী দিনেও প্রথম আলো সাহসিকতার সঙ্গে সত্য প্রকাশ করবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে মানিকগঞ্জ শহরে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের পাদদেশে মানিকগঞ্জ বন্ধুসভা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ তোলারাম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ঊর্মিলা রায়, জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের জেলা কমিটির সভাপতি ও লেখক আবুল ইসলাম শিকদার, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা কমিটির সহসভাপতি ইকবাল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দিশারীর সভাপতি হাসান শিকদার, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, মানিকগঞ্জ সদরের গড়পাড়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মুনসুর আলী ও মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিদওয়ান হোসেন।
মানিকগঞ্জ বন্ধুসভার সভাপতি চান মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সহসভাপতি আবদুস সালামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি আব্দুল মোমিন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ঊর্মিলা রায় বলেন, প্রথম আলো কারও একার নয়। সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের চাহিদার উপযোগী সংবাদ পরিবেশন করে আসছে প্রথম আলো। অধ্যাপক আবুল ইসলাম শিকদার বলেন, প্রথম আলো কৈশোর পার করে যৌবনে পা দিয়েছে। বাংলাদেশের বহু পত্রপত্রিকা যেমন প্রকাশিত হয়েছে, তেমনই কালের গর্ভে হারিয়েও গেছে। কিন্তু প্রথম আলো সংবাদপত্রের জগতে একটি মাইলফলক। প্রথম আলো মূল স্রোত থেকে পিছপা হবে না।
‘অভিভাবকতুল্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম আলোকে পেয়েছি। এমন কোনো ক্ষেত্র নাই, যেখানে তার পদচারণ অস্পষ্ট থাকে। সত্য তথ্য প্রকাশের জন্য প্রথম আলো অবিচল রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি ২৬টি বছর ধরে ভালোবাসা, সেবা এবং সততার দৃষ্টান্ত রেখে কতভাবে মানুষকে উজ্জীবিত করা যায়, তা করে যাচ্ছে।’
প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজশাহীতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ আবদুস সামাদ মণ্ডল। প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত রাজশাহীর আলোর পাঠশালা মাঠে আজ শুক্রবার বিকেলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রথম আলো বন্ধুসভা।
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হয়। মায়ের কোলে থেকে ১০ বছরের শিশু ফাহিমকে প্রথম কেক খাইয়ে দেওয়া হয়। পরে সব অতিথিকে কেক তুলে দেওয়া হয়। এই পর্বে কথা বলেন।
রাজশাহী বন্ধুসভার সভাপতি মো. মাসুদ রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ আবদুস সামাদ মণ্ডল, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের প্রধান মূল্যায়ন কর্মকর্তা এস এম গোলাম আজম, রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সাইয়েদুর রহমান, রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তানভিরুল হক, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক আফান মন্ডল, প্রথম আলোর রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ প্রমুখ। বন্ধুসভার সদস্য ঔড়ব আজাদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর রাজশাহী প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম।
কৃষক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘একজন মানুষের জন্য ২৬ বছর পরিণত বয়স। প্রথম আলো সেই পরিণত অবস্থায় আছে। তার কাঁধে এখন দায়িত্ব অনেক বেশি। সকলেই প্রথম আলোর পাশে থাকব। এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করে প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত রাজশাহীর আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থী মোসা. রাহি, হাফিজা, সোমাইয়া, জেসমিন ও সুরাইয়া পারভীন। এতে বন্ধুসভার বন্ধু নাহিদ হাসান, আনোয়ার হোসেন, দৃষ্টি গান পরিবেশন করেন। বাদ্যযন্ত্রে সহযোগিতা করেন জয় খ্রীষ্টফার বিশ্বাস।
প্রথম আলোর চলার পথ কখনো মসৃণ ছিল না। অনেক বাধা ছিল। নানাভাবে প্রথম আলোকে থামানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি। এর বড় কারণ হলো পাঠকের আস্থা। শুরু থেকেই তার বস্তুনিষ্ঠ অবস্থানে থেকে পাঠকদের সব সময় সত্য তথ্য দিচ্ছে। সত্য প্রকাশ প্রথম আলোর বড় শক্তি। প্রথম আলোকে সত্যের পক্ষে থাকতেই হবে।
সুনামগঞ্জে প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে বক্তারা এসব কথা বলেন। পৌর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে শুক্রবার সন্ধ্যায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রথম আলো বন্ধুসভা। এতে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার লোকজন অংশ নেন। অনুষ্ঠানে আলোচনার সঙ্গে কবিতা আবৃত্তি ও সংগীত পরিবেশনা ছিল।
অনুষ্ঠানে আসা অতিথিরা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কঠিন সময়ে প্রথম আলো যে সাহস নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করেছে, তার প্রশংসা করেন। তাঁরা বলেন, এই সময়টায় প্রথম আলোর দিকে দেশ-বিদেশের মানুষ তাকিয়ে ছিলেন। মানুষ সবকিছুর পর প্রথম আলো কী বলেছে বা লিখেছে, সেটি দেখতেন। প্রথম আলোর কথা মানুষ বিশ্বাস করতেন। এই ধারা যেন অব্যাহত থাকে।
সুনামগঞ্জ বন্ধুসভার উপদেষ্টা মো. রাজু আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সুনামগঞ্জের নিজস্ব প্রতিবেদক খলিল রহমান। আলোচনা পর্বে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দে, কবি ও গীতিকার ইসতিয়াক রুপু, সুনামগঞ্জ সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সহসভাপতি কানিজ সুলতানা, সমাজকর্মী রমেন্দ্র কুমার দে, শিক্ষক এনামুল কবির। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন সোহেল রানা ও রীতা আচার্য, কবিতা আবৃত্তি করেন বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক তাজকিরা হক। সুনামগঞ্জ বন্ধুসভার সভাপতি সৌরভ সরকার সব শেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্যাপনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, প্রথম আলো এক দিন না পড়লে এক দিনের জন্য পিছিয়ে পড়তে হয়। নিজেকে এগিয়ে রাখতে প্রতিদিন প্রথম আলো পড়তে হয়। প্রথম আলোর স্লোগানগুলো নিজেকে আন্দোলিত করে, দেশমাতৃকার প্রতি ভালোবাসা জাগায়। প্রথম আলো সময়টাকে বুঝতে শেখায়। তারুণ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ দেখায়।
আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোর ভৈরব কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বন্ধুসভা। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ভৈরবের নিজস্ব প্রতিবেদক সুমন মোল্লা। অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন ভৈরব বইমেলা পরিষদের সভাপতি সাগর রহমান, ভৈরব টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজ্জামান ফারুক, কাকলি খেলাঘর আসর ভৈরব শাখার সভাপতি সত্যজিৎ দাস ধ্রুব, নিরাপদ সড়ক চাই ভৈরব শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আলাল উদ্দিন, বন্ধুসভার উপদেষ্টা ওয়াহিদ আমিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ভৈরব বন্ধুসভার সভাপতি প্রিয়াংকা ও সাধারণ সম্পাদক মানিক আহমেদ। সংগীত পরিবেশন করেন বন্ধুসভার বন্ধু মোশারফ রাব্বী, দেশাত্মবোধক ও লোকগানের ওপর নাচ করেন উম্মে হানি এবং কবিতা আবৃত্তি করেন মহিমা মেধা।
সংবাদপত্রের ক্ষেত্রে পাঠকের আস্থা অর্জনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পাঠকের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সঠিক ও নির্ভুল সংবাদ উপস্থাপনের কারণেই প্রথম আলো দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। দেশের অন্যান্য সংবাদপত্র যেখানে পিছিয়ে, সেখানে প্রথম আলো পাঠকের বিশ্বাস অর্জনে সক্ষম হয়েছে। তবে কৃষি ও কৃষি গবেষণার প্রতি পাঠকের চাহিদা পূরণে ‘কৃষি পাতা’ চালু করা অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথিরা এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের সম্মেলনকক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাকৃবি বন্ধুসভা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. শহীদুল হক, ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন মো. বাহানুর রহমান, প্রক্টর মো. আবদুল আলীম, ১১ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর সিরাজুল ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকেরা। এ ছাড়া বন্ধুসভার সভাপতি হুরে জান্নাত বিনতে তফিক, সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসানসহ বন্ধুসভার সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম আলো দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পত্রিকা। আমি নিজেও এর একজন একনিষ্ঠ পাঠক। দেশের উন্নয়ন ও মঙ্গল কামনায় প্রথম আলোর ভূমিকা প্রশংসনীয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে প্রথম আলো আরও এগিয়ে যাবে বলে আমি আশাবাদী।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের গ্যালারি কক্ষে। আজ শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘দেশ ও সমাজ এগিয়ে যায়, যখন পত্রিকা সত্য তথ্য প্রচার করে। গত ২৬ বছর ধরে প্রথম আলো সত্য প্রকাশে কাজ করছে। যেকোনো ঘটনার সত্যতার জন্য প্রথমেই পত্রিকা হিসেবে আমরা প্রথম আলোর দিকে তাকাই। কারণ, সমাজের ও দেশের আয়নাস্বরূপ পত্রিকাটি কাজ করছে। সত্য যদি প্রকাশ করা না হয়, তাহলে আমরা কিছুই জানতে পারব না। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিংবা দলের রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির কথা শুনে থাকি। কিন্তু লেজুড়বৃত্তি নয়, প্রথম আলো সব সময় আপসহীন ভূমিকা রাখছে।’
প্রথম আলো বন্ধুসভার তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক হাসনাত ইমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. মোখলেসুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মো. আবদুল কাদির, প্রথম আলো সিলেটের নিজস্ব প্রতিবেদক সুমনকুমার দাশ। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নোমান মিয়া।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিলেট বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক দেব রায় সৌমেন, ম্যাগাজিন সম্পাদক শেখ ফয়সাল আহমদ, শাবিপ্রবি বন্ধুসভার সভাপতি মো. শাফিনূর ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত ও পরে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শিকড়ের’ সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, প্রথম আলো এখন সবার নিত্যসঙ্গী হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে পত্রিকাটি সত্য প্রকাশে আপসহীন। এ ছাড়া প্রথম আলো শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণার জন্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। পেশাদারত্বের জন্য প্রথম আলো এখন দেশে একটি শীর্ষ গণমাধ্যমে রূপ পেয়েছে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা, সুনামগঞ্জ, কক্সবাজার ও ভৈরব; প্রতিনিধি, দিনাজপুর, চাঁদপুর, শেরপুর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নড়াইল, শরীয়তপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়]