ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে বিলুপ্তপ্রায় একটি নীলগাই উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের ফকিরভিটা এলাকা থেকে স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতায় আজ সোমবার বিকেলে নীলগাইটি উদ্ধার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ধারণা করা হচ্ছে, ভারত থেকে সীমান্ত দিয়ে প্রাণীটি চলে এসেছে।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা একটার দিকে কান্তিভিটা সীমান্ত এলাকার ৩৯০ নম্বর মেইন পিলার থেকে দেড় কিলোমিটার বাংলাদেশের ভেতরের শালডাঙ্গা গ্রামের লোকজন নীলগাইটি দেখতে পান। দেখার পর স্থানীয় লোকজন ধরার চেষ্টা করলে নীলগাইটি দৌড়াতে দৌড়াতে মোড়লপাড়া গ্রামের দিকে এগিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বিজিবির সদস্যরা বেলা পৌনে তিনটার দিকে সীমান্তের ৩৯১ নম্বর মেইন পিলারের সাব পিলার এলাকার তিন কিলোমিটার বাংলাদেশের ভেতরে পাড়িয়া ইউনিয়নের ফকিরভিটা গ্রামে নীলগাইটিকে আটক করে।
নীলগাই উদ্ধারের খবর পেয়ে ওই এলাকায় উৎসুক মানুষের ভিড় জমে। মানুষের ভিড় সামাল দিতে বিজিবি সদস্যদের বেগ পেতে হয়। সে সময় পাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা খসিউর বলেন, ধারণা করা হচ্ছে সীমান্ত পেরিয়ে নীলগাইটি বাংলাদেশে চলে এসেছে। বছর দুই আগে পাশের শৌলা দোগাছি এলাকা থেকে একটি নীলগাইটিকে উদ্ধার করেছিল বিজিবি।
ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, নীলগাইটি এখন বিজিবির কান্তিভিটা ক্যাম্পে রাখা আছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বন বিভাগের কাছে নীলগাইটি হস্তান্তর করা হবে।
জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, নীলগাইটির হস্তান্তর নিয়ে বিজিবির সঙ্গে কথা হয়েছে। আপাতত এটি সাফারি পার্কে হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে। নীলগাইটি সুস্থ আছে জানিয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. নাসিরুল ইসলাম জানান, উদ্ধার হওয়া নীলগাইটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের এই কর্মকর্তা জানান, নীলগাই অনেকটা হরিণ আর গরুর মাঝামাঝি দেখতে। নীলগাই বিরল প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় একটি বন্য প্রাণী। ‘গাই’ হিসেবে পরিচিত হলেও নীলগাই গরুশ্রেণির নয়; বরং এটি এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ হরিণবিশেষ প্রাণী। যার বৈজ্ঞানিক নাম Coselaphus tragocamelus। শত বছর আগে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় নীলগাই দেখা যেত। দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের মাঠে-ঘাটে একসময় নীলগাইয়ের দেখা মিলত। এখন দেখা যায় না।