প্যারাবনের গাছ সাবাড় করে চিংড়িঘেরের বাঁধ নির্মাণ

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় অবৈধভাবে চিংড়িঘেরের বাঁধ নির্মাণের জন্য নির্বিচারে প্যারাবনের বাইন গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার হোয়ানক ইউনিয়নের কালাগাজি পাাড়ার কাটা বগাচতর ঘোনার পশ্চিম পাশে
ছবি: সংগৃহীত

চিংড়িঘের করার জন্য কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের কালাগাজি পাড়ায় প্যারাবনের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অন্তত ২০০ একর বনভূমি দখল করে চিংড়িঘেরের জন্য বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে বনের দুই হাজার বাইনগাছ কাটা পড়েছে। বাঁধ নির্মাণের কাজ অব্যাহত থাকায় প্যারাবনের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে পড়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বন বিভাগের মহেশখালীর গোরকঘাটা রেঞ্জের ঝাপুয়া বিটের অধীন কালাগাজি পাড়ার বগাচতর ঘোনার পশ্চিমে দুই সপ্তাহ ধরে প্যারাবনের গাছ নিধন চলছে। ভূমিদস্যূরা শতাধিক শ্রমিক দিয়ে দিনদুপুরে প্যারাবন গাছ কাটার পর খননযন্ত্র দিয়ে চিংড়িঘেরের জন্য বাঁধ নির্মাণ করছে। তবে মঙ্গলবার দুপুরে প্যারাবনের গাছ কেটে বাঁধ নির্মাণের সময় স্থানীয় বনকর্মীরা বাধা দেন। এ সময় বনের গাছ কাটা ও বাঁধ নির্মাণের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকেরা পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে বন বিভাগের ঝাপুয়া বিট কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহাবুবুল হক বলেন, মোহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে একটি চক্র কয়েক দিন ধরে প্যারাবন নিধন করেই চিংড়িঘেরের বাঁধ নির্মাণ করছে। বনকর্মীরা মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার দুই দফা অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে নির্মিত চিংড়িঘেরের বাঁধ কেটে দিয়েছে। প্যারাবনের গাছ কেটে বাঁধ নির্মাণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।  

বন বিভাগের মহেশখালীর গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম আনিসুর রহমান বলেন, চিংড়িঘেরের জন্য বাঁধ করতে গিয়ে প্যারাবনের ছোট-বড় মিলে অন্তত দুই হাজার বাইনগাছ কাটা পড়েছে। এতে বন বিভাগের প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম আনিসুর রহমান বলেন, ভূমিদস্যূরা প্রথমে শ্রমিক দিয়ে প্যারাবনের গাছ কাটে। পরে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে বনের জমিতে অবৈধভাবে চিংড়িঘেরের বাঁধ তৈরি করে। তবে পশ্চিম পাশের বাঁধ নির্মাণকাজ শেষ হলেও উত্তর ও দক্ষিণ পাশের বাঁধ নির্মাণ করতে পারেনি তারা। ফলে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁধের কয়েকটি স্থানে কেটে দিয়ে অন্তত ১০০ একর বনভূমি দখলমুক্ত করা হয়েছে।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী বলেন, প্যারাবন নিধন করায় পরিবেশের কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, তা বলার মতো নয়। কিন্তু এ নিয়ে বন বিভাগের পক্ষ থেকে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলেই তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।