পরীক্ষায় পৃষ্ঠা নম্বরসহ গাইড বইয়ের প্রশ্ন, তদন্ত কমিটি গঠন

উত্তরের পৃষ্ঠা নম্বরসহ গাইড বই থেকে হুবহু তুলে ধরা প্রশ্ন
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার ধামরাই উপজেলায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বাচনী পরীক্ষায় গাইড বইয়ের প্রশ্ন হুবহু ফটোকপি করে সেই প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ওদুদুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ভোকেশনাল শাখার রসায়নবিজ্ঞান-২–এর (সৃজনশীল) পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামীকাল সোমবারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ওদুদুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, গত মঙ্গলবার ভোকেশনাল শাখার রসায়নবিজ্ঞান-২–এর (সৃজনশীল) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় সরবরাহ করা প্রশ্নপত্রের প্রতিটি প্রশ্নের নিচে উত্তরের পৃষ্ঠা নম্বর লেখা দেখতে পায় শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা ‘সিসটেক টেকনিক্যাল পাবলিকেশন্স’ নামে একটি গাইড বইয়ের প্রশ্নের সঙ্গে পরীক্ষায় সরবরাহ করা প্রশ্নের হুবহু মিল দেখতে পায়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, দশম শ্রেণির ভোকেশনাল শাখার প্রশ্নপত্রটিতে পূর্ণমান ৩০ নম্বরের রসায়নবিজ্ঞান-২ (সৃজনশীল) ১৯২৬ নম্বর কোডের প্রশ্নপত্রটিতে ১২টি প্রশ্ন ছিল। প্রতিটি প্রশ্নের নিচে উত্তরের পৃষ্ঠা নম্বর দেওয়া ছিল। পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা ‘সিসটেক টেকনিক্যাল পাবলিকেশন্স’ নামে গাইড বইয়ের ২২০ ও ২২১ পৃষ্ঠায় হুবহু একই প্রশ্ন দেখতে পায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলে, বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ফিরোজ আল মামুন ও সহকারী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম প্রশ্নপত্রটি তৈরির দায়িত্বে ছিলেন। ওই শিক্ষকদের কাছে যারা প্রাইভেট পড়ে, তাদের সুবিধা করে দিতে এভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে। তবে শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে ভুল করে গাইড বইয়ের একটি অংশ থেকেই প্রশ্ন করা হয়েছে বলে জানান।

জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশ্ন তৈরির ক্ষেত্রে গাইড বইয়ের কিছু প্রশ্ন আর আমাদের নিজেদের কিছু প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করি। ভোকেশনাল শাখার রসায়নবিজ্ঞান-২ (সৃজনশীল) পরীক্ষার প্রশ্নপত্রটি একটি গাইড বইয়ের হুবহু হয়ে গেছে। এটি একটি ভুল। তবে গাইড বইয়ের প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ায় খুব বেশি ক্ষতি হয়েছে, এমন নয়।’

শিক্ষক ফিরোজ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাহাঙ্গীর স্যার ওই বিষয়ে ক্লাস নেন। প্রশ্নপত্র তৈরির বিষয়টি তিনিই দেখেছেন। এখানে অযথাই আমাকে জড়ানো হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি না বুঝে অভিযোগ করছে।’

বিষয়টি নিয়ে ওদুদুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ভোকেশনাল শাখার রসায়নবিজ্ঞান-২ বিষয়ের প্রশ্নপত্রটি নিয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর আজ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী এক কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।