বৃষ্টির পানির চাপে শরীয়তপুর-নড়িয়া প্রধান সড়কের প্রেমতলা এলাকায় সড়ক ধসে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আজ সোমবার সকাল থেকে নড়িয়া উপজেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকা ও জেলা শহরসহ বিভিন্ন গন্তব্যের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও চালকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সংস্কার শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার রাতের আগে সড়কটি চালু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলা শহরের প্রেমতলা মোড় থেকে নড়িয়া উপজেলা সদর পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কপথ আছে। সড়কটি দিয়ে নড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষ ঢাকা ও জেলা শহরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করেন। উপজেলাটির প্রায় সব হাটবাজারে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী সরবরাহ করা হয় ওই সড়ক ব্যবহার করে। কিন্তু সদর উপজেলার প্রেমতলা এলাকায় সড়কটির ১০ ফুট অংশ ধসে পড়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে আজ সকালে সড়কটির ওই অংশ ধসে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়কটির ওই স্থান দিয়ে কৃষিজমিতে সেচের পানি সরবরাহের পাইপ বসানো হয়েছে। বৃষ্টির কারণে অতিরিক্ত পানির চাপে পাইপ ভেঙে সড়কটি সোমবার সকালে ধসে পড়ে। খবর পেয়ে সওজের কর্মীরা ধসে পড়া অংশের সংস্কারকাজ করতে যান। তখন ওই পাইপ বন্ধ করে বালু ও ইট দিয়ে সড়কটি সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়। তাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন বাধা দেন। এ কারণে আজ সড়কটির সংস্কার সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে শরীয়তপুর সওজের কার্যসহকারী রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জিও ব্যাগে বালু ভরে ও ইট দিয়ে সড়কটির সংস্কার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু স্থানীয়দের বাধায় তা পারিনি। ওই স্থানে অস্থায়ীভাবে একটি বেইলি সেতু স্থাপন করা হবে। ইট ও বালুর বস্তার ওপর ৩০ ফুট লম্বা ও ১৮ ফুট প্রশস্ত বেইলি সেতু বসানো হবে। মঙ্গলবার সারা দিন লেগে যাবে বেইলি সেতুটি স্থাপন করতে। তারপর যানবাহন চলাচল করতে পারবে।’
সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নড়িয়ার চান্দনি এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম জানান, উপজেলাটির বিভিন্ন খামারের মাছ ঢাকায় পাঠান তিনি। প্রতিদিন অন্তত চারটি ট্রাকে এসব মাছ রাজধানীতে যায়। তবে প্রধান সড়কটি বন্ধ হওয়ায় ৩০ কিলোমিটার পথ ঘুরে ট্রাকগুলো গন্তব্যের উদ্দেশে হয়েছে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি পরিবহন ব্যয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে সড়কটি সম্পূর্ণভাবে সংস্কার শেষে যান চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে বলে জানান শরীয়তপুর সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী ইখতিয়ার মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘সড়কটি ধসে পড়ার খবর পেয়ে আজ সকাল থেকে আমাদের ১২ জন কর্মী কাজ করছেন। ওই স্থানে একটি বেইলি সেতু স্থাপন করা হবে। সেই বেইলি সেতুর মালামাল গোপালগঞ্জ থেকে আনা হচ্ছে। আমাদের কর্মীরা বেইলি সেতু স্থাপনের জন্য জিও ব্যাগ ও ইটের স্তর প্রস্তুত করছেন।’