উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ায় আপন ছোট ভাইকে কুলাঙ্গার আখ্যা দিলেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা। কাদের মির্জা একই সঙ্গে বসুরহাট পৌরসভার মেয়রও। তাঁর ছোট ভাই শাহদাত হোসেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা দুজনই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বসুরহাট পৌরসভার সরকারি মিলনায়তনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলের সমর্থনে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় কাদের মির্জা ভাইয়ের প্রসঙ্গে এ কথা বলেন। শাহদাত হোসেন তাঁর ভাই নন বলে তিনি মন্তব্য করেন। তাঁর বক্তব্যটি স্থানীয় একাধিক সাংবাদিক ফেসবুকে লাইভে প্রচার করেন। ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে দেওয়া কাদের মির্জার ওই বক্তব্য নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
শাহদাত হোসেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার পর হলফনামায় মামলার তথ্য না দেওয়ায় এবং আয়-ব্যয়ের বিবরণী না থাকায় প্রথমে যাচাই-বাছাইয়ে পরবর্তী সময়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আপিলে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল হয়। এরপর তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদন করে প্রার্থিতা ফিরে পেলেও এখনো প্রতীক বরাদ্দ পাননি। তৃতীয় ধাপে ২৯ মে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মতবিনিময় সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আজ ওবায়দুল কাদের ঘুমাতে পারেন না একটা ছেলের জন্য। সে আমার ভাই নয়, ওবায়দুল কাদেরের ভাই নয়। ওবায়দুল কাদের সাহেব স্টেটমেন্ট দিয়ে বলেছেন, কোনো মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়স্বজন নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবে না। আমাদের ভাই নয় এই কুলাঙ্গার শাহদাত। তার কারণে আজ ওবায়দুল কাদের অসহায়, সাংবাদিকদের সামনে গেলে চেহারা কালো হয়ে যায়। শেখ হাসিনার কাছে জবাব দিতে পারে না।’
কাদের মির্জা বলেন, ‘সে (শাহদাত) আজ কোর্টে কোর্টে ঘুরছে। কাদের ইঙ্গিতে এ ষড়যন্ত্র হচ্ছে একদিন প্রকাশ হবে ইনশা আল্লাহ। ওবায়দুল কাদেরের ইজ্জত যে ছেলে নষ্ট করে, সে ছেলেকে যদি ভোটে আসে, ভোট দেওয়া যায়?...না। আল্লাহর গজব পড়বে এই ছেলের ওপর।’
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ছোট ভাই শাহদাতের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘একটা সালিস তার জন্য করতে পারি না পৌরসভায়। সালিসে রায় দিলে যে হেরে যায়, সে তার পক্ষ হয়। সালিস বাস্তবায়ন করতে পারি না এই ছেলের কারণে। এই ছেলেকে ঘৃণাভরে যদি প্রত্যাখ্যান না করেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব যদি মারা যান, তাঁর আত্মার শান্তি পাবে না।’
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমার কষ্টে বুক ফেটে যায়, আমি হচ্ছি পৌরসভার মেয়র। সে আমার বয়সে অনেক ছোট। সে উপজেলা চেয়ারম্যান হবে, এটা কেমন কথা? আপনারা বলেন? আমার ইজ্জত থাকবে? আমি আপনাদের কাছে করজোড়ে অনুরোধ করব, একটা ভোটও ওই ছেলেকে দেবেন না। আপনারা আমাদের প্রার্থীদের ভোট দেবেন। আমি বসুরহাট বাজারের শান্তি রক্ষার জন্য যা যা করার সবকিছু করব।’
জানতে চাইলে শাহদাত হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল কাদের মির্জাকে তিনিও ভাই বলে পরিচয় দেন না।