অদম্য মেধাবী প্রভা গোলদার এবারের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। দিনমজুর মা-বাবার সন্তান প্রভা নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। এসএসসিতেও জিপিএ-৫ পাওয়া প্রভার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার।
প্রভা গোলদার যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার কমলাপুর গ্রামের অসীম গোলদারের মেয়ে। অভাবের সংসারে বড় হওয়া প্রভা ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো অদম্য মেধাবী তহবিল থেকে শিক্ষা বৃত্তি পেয়ে আসছেন। তিনি এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলার বাকড়ী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
মেয়ের ধারাবাহিক সাফল্যে খুশি মা বাসন্তী গোলদার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের অভাবের সংসার। মাত্র সাত শতক জমির ওপর বসতবাড়ি। মাঠে এক বিঘার মতো ধানি জমি আছে। এ ছাড়া সহায় সম্পদ বলতে আর কিছুই নেই। তিনটি ছেলেমেয়ের পড়ালেখার ব্যয় অনেক। এ জন্য কখনো নিজের জমি কখনো অন্যের জমিতে কাজ করি। প্রভার ফলাফলে আমি ভীষণ খুশি। সে ডাক্তার হতে চায়। মেয়েটাকে নিয়ে আমাদের অনেক আশা।’
প্রভা গোলদারেরা তিন ভাইবোন। সবার ছোট প্রভা। বড় ভাই অমিত গোলদার যশোর সরকারি এম এম কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে এমএসএস পাস করে চাকরির চেষ্টায় আছেন। ছোট ভাই অন্তু গোলাদার নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে ব্যবসায় শিক্ষার স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
বাসন্তী গোলদার বলেন, সবদিন তাঁরা স্বামী-স্ত্রী দিনমজুরির কাজ পান না। তাঁদের আয় কম, ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার ব্যয় বেশি। মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে চান তাঁরা। তবে তাঁদের আয়ে সেটা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বাবা অসীম গোলদার বলেন, ‘প্রভা জিপিএ-৫ পেয়েছে। এতে আমি খুব খুশি। মেয়েটা ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো অদম্য মেধাবী তহবিল থেকে শিক্ষা বৃত্তি পেয়েছে। এ জন্য তার কলেজে পড়া সহজ হয়েছে। প্রভা ডাক্তারি পড়তে চায়। শেষ পর্যন্ত সেটা সম্ভব হবে কি না জানি না।’