সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনার পর ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের এক নেতাকে সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি এই সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল ও এলাকাবাসীর সঙ্গে ছাত্রলীগের সমর্থক শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ছাত্রদলের সাঁটানো ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনার জের ধরে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে সেনাসদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সংঘর্ষের ঘটনার জেরে আজ শুক্রবার তারিখ দেখিয়ে গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটি বাতিল করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। শিগগির এ ইউনিটের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।
কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের অনুমোদনক্রমে আরও দুটি বিজ্ঞপ্তি সংগঠনের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেন দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এর একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. সাহেদুল ইসলামকে (রোমেন) প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। তাঁর সঙ্গে ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হলো।
অপর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার যথাযথ তদন্তের জন্য ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ও প্রচার সম্পাদক শরীফ প্রধান ওরফে শুভর নেতৃত্বে দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী রোববারের মধ্যে এ কমিটিকে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে লিখিতভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
যোগাযোগ করলে সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় একজনকে বহিষ্কারের পাশাপাশি দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা আগামীকাল শনিবার সিলেটে আসবেন। এ ছাড়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৭ সালে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি হয়েছিল। তবে কমিটিতে থাকা শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে পাস করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। এরপর আর নতুন কমিটি গঠিত হয়নি। তবে কমিটি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় ছিলেন।