হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানাহাজতের ভেতর থেকে গোলাম রাব্বানী (২০) নামের এক তরুণের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করে গোলাম রাব্বানীকে হত্যা করার অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার। ঘটনার চার দিন পর আজ শনিবার তাঁকে প্রত্যাহার করা হলো।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্ত এসআই মনিরুল ইসলামকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে হবিগঞ্জ পুলিশ লাইনসে যুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের তদন্ত কমিটি শিগগিরই এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
নিহত গোলাম রাব্বানী বানিয়াচং উপজেলা সদরের নন্দিপাড়া মহল্লার মিহির উদ্দিনের ছেলে। তিনি ইজিবাইকের চালক ছিলেন।
বানিয়াচং থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উপজেলার বড় বাজার থেকে গোলাম রাব্বানীকে একটি ইজিবাইক চুরির মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে থানাহাজতে রাখা হয়। ওই দিন রাত সাড়ে সাতটার দিকে পুলিশ দেখতে পায়, হাজতের ভেতরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গোলাম রাব্বানীর লাশ ঝুলছে। পরে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় পুলিশের কাছে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্ন ছিল, হাজতের ভেতরে থাকা আসামি কীভাবে গলায় ফাঁস দেন? জবাবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন দাবি করেছিলেন, আসামির পরনে থাকা গেঞ্জি ও কাপড় দিয়ে তিনি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দেন।
গোলাম রাব্বানীর বড় ভাই মঈন উদ্দিন আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাই ইজিবাইকচালক ছিলেন। তাঁকে একটি মিথ্যা চুরির মামলায় থানার এসআই মনিরুল ইসলাম গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পর তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। অতিরিক্ত নির্যাতনে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়।’ মঈন উদ্দিন আরও বলেন, তাঁর ভাইয়ের লাশের গায়ে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। তাঁর ভাইয়ের সুরতহাল প্রতিবেদন এখনো পুলিশ দেয়নি। এ প্রতিবেদন পাওয়ার জন্য থানায় আসা-যাওয়া করছেন। কিন্তু পুলিশ এ নিয়ে টালবাহানা করার কারণে তিনি তাঁর ভাই হত্যার মামলা করতে পারছেন না। তবে এ ঘটনায় আদালতে মামলা করবেন বলে জানান তিনি।