নেত্রকোনার মদনে ভুল করে ইজিবাইকে ফেলে যাওয়া টাকার ব্যাগ পেয়ে সেটি ফিরিয়ে দিয়েছেন রাসেল মিয়া (৩২) নামের এক চালক। গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে প্রকৃত মালিক রহিমা আক্তারের (৫৪) কাছে ব্যাগটি তুলে দেন তিনি। ওই ব্যাগে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও কিছু কাপড় ছিল।
রাসেল মিয়ার বাড়ি উপজেলার কুলিয়াটি দক্ষিণপাড়া এলাকায়। তিনি ওই গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। আর ব্যাগটি যার, সেই রহিমা আক্তার পাশের আটপাড়া উপজেলার তারাচাপুর গ্রামের ওয়াছ করুনীর স্ত্রী।
এলাকার কয়েক বাসিন্দা ও মদন বাজার সমিতির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রহিমা আক্তারের স্বামী অসুস্থ হয়ে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। গতকাল সোমবার বিকেলে তিনি মদন ব্র্যাক কার্যালয় থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেন। পরে সেখান থেকে কাপড়ের ব্যাগে টাকাগুলো নিয়ে হাসপাতালে যান। রহিমার ননদ তারিফা আক্তার অসুস্থ ভাইকে দেখতে হাসপাতালে আসেন। সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে চলে যাওয়ার সময় রহিমা তারিফার সঙ্গে টাকাসহ ব্যাগটি দিয়ে দেন বাড়িতে নিয়ে রাখতে। তারিফা হাসপাতালের সামনে থেকে একটি ইজিবাইকে করে মদন বাজারে যান। ভুলবশত তিনি ইজিবাইকে ব্যাগটি ফেলে যান।
ইজিবাইকচালক রাসেল মিয়া গতকাল রাত আটটার দিকে বাড়িতে ফিরে টাকার ব্যাগ পেয়ে তাঁর বাবাকে বিষয়টি জানান। তাঁর বাবার পরামর্শে ব্যাগটি নিয়ে তিনি মদন অটোস্ট্যান্ডের সভাপতি কামরুল ইসলামের কাছে যান। অন্য চালকদেরও বিষয়টি জানানো হয়। খোঁজাখুঁজির পর ব্যাগের মালিকের সন্ধান পাওয়া যায়। রাত ১১টার দিকে মদন বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সাদেক আকন্দের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে রহিমাকে ডেকে ব্যাগটি তুলে দেওয়া হয়।
টাকার ব্যাগ পেয়ে রহিমা আক্তার বলেন, ‘টাকাটা না পেলে আমার খুব বড় ক্ষতি হয়ে যেত। অটোরিকশাচালক রাসেল মিয়া টাকার প্রতি লোভ না করে ফেরত দিয়েছেন। আমি তাঁকে কিছু টাকা দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তিনি তা নেননি।’
রাসেল মিয়া বলেন, ‘আমানত তুলে দিতে পেরে আমার আনন্দ লাগছে। আমার অন্যের জিনিসপত্রের প্রতি কোনো লোভ নাই। অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় করি, তাতে আমার সংসার চলে যায়।’
অটোস্ট্যান্ডার সভাপতি কামরুল ইসলাম বলেন, ‘রাসেল আগেও একবার এক ব্যক্তির মানিব্যাগ পেয়ে আমার মাধ্যমে ফেরত দিয়েছেন।’