বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে অপসারণ করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ফিরিয়ে আনা হবে। মানবাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। তারা জানে এই দেশে কোনো ধোঁকাবাজি করে কেউ সরকারে থাকতে পারবে না।
আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে মহান বিজয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বিএনপির এ নেতা।
বর্তমান সরকার মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এখানে আমরা কোন বিজয় উদ্যাপন করতে এসেছি। বাংলাদেশের সরকারের সামনে দেশের মানুষের সেই প্রশ্ন তুলে ধরতে হবে। এটা কীসের বিজয়। এটা কি একদলীয় শাসনের বিজয়, নাকি একনায়কতন্ত্রের শাসনের বিজয়? নাকি এমন একটি সরকার চলছে, যারা মানুষকে কথা বলতে দেয় না। যারা মানুষকে ভোট দিতে দেয় না।’
আবদুল মঈন খান আরও বলেন, আওয়ামী লীগ এই দেশের কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে এ দেশের গণতন্ত্রের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে এবং তাঁরা চরম দুর্নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে এই দিনের জন্য কি ৫২ বছর আগে লাখ লাখ মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন? আওয়ামী লীগ যদি দাবি করে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, তাহলে আওয়ামী লীগকে জবাবদিহি করতে হবে কেন তারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে বাংলাদেশে একদলীয় স্বৈরাচারী সরকার কায়েম করেছে। বাংলাদেশের মানুষ বর্তমান সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সরকারের নৈতিক পরাজয় হয়েছে।
আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই সরকারের নৈতিক পরাজয় ইতিমধ্যেই হয়েছে। আরও একটি নির্বাচনের তফসিল দিয়েছে। কোন নির্বাচন? যে নির্বাচনে তাঁরা প্রকাশ্যে সব লজ্জা ভুলে গিয়ে প্রকাশ্যে দর-কষাকষি করে তাঁরা সিট ভাগাভাগি করছে। এটার নাম গণতন্ত্র হতে পারে না। যদি সিট ভাগাভাগি করে এমপি নির্ধারিত হয়, তাহলে তো এই নির্বাচন ইতিমধ্যে ব্যর্থ হয়ে গেছে।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ফলাফল লিখে ফেলেছে। আগামী ৭ তারিখ শুধু সেই ফলাফল তারা ঘোষণা দেবে। এটা কোনো নির্বাচন নয়, এই নির্বাচন দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ধোঁকা দেওয়া যাবে না।
মিথ্যা মামলা, হামলা এবং ভুয়া ও গায়েবি মামলা দিয়ে গত ছয় সপ্তাহে ২৩ হাজার নেতা-কর্মীকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে বলে জানান আবদুল মঈন খান। তিনি বলেন, এসব ভুয়া মামলা দিয়ে গণতন্ত্রকামীদের কারারুদ্ধ করে এই দেশে তারা (সরকার) থাকতে পারবে না। এই দেশের মানুষ বর্তমান সরকারকে বর্জন করেছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তারা রাজনৈতিক মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। দলের মহাসচিবকে তারা গায়েবি মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ভুয়া মামলা দিয়ে তারা বিদেশে আটকে রেখেছে, তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না। তবে এসবে তাঁরা দমে যাবেন না। শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় এ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবেন তাঁরা, সেই কারণে রাজপথে আছেন।