গাজীপুরের শ্রীপুরে বন বিভাগের জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কাফিলাতলী গ্রামে
গাজীপুরের শ্রীপুরে বন বিভাগের জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কাফিলাতলী গ্রামে

শ্রীপুরে বনের জমি উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান, বাধা দেওয়ায় একজন আটক

গাজীপুরের শ্রীপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বনভূমি উদ্ধারে অভিযানে নেমেছে যৌথ বাহিনী। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজাবাড়ি ইউনিয়নের কাফিলাতলী গ্রামে এ অভিযান শুরু করা হয়। আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বন বিভাগের ৬ একর জমি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া সব জমি থেকে ১১৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং উচ্ছেদ কার্যক্রমে বাধা দেওয়ায় এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

আটক ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগের একটি সূত্র। তবে তাঁর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ভুক্তভোগী কয়েকজনের অভিযোগ, কোনো নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ অভিযানটি চালানো হয়েছে। তবে অভিযোগটি অস্বীকার করেছে বন বিভাগ।

এ অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, পুলিশ, বন বিভাগ, ওয়াইল্ড লাইফ সেন্টারসহ বিভিন্ন বিভাগের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আর এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজীব আহমেদ।

অভিযানের সময় আজ বেলা একটা থেকে দুইটা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন সদস্যদের উপস্থিতিতে বন বিভাগের লোকজন উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছিলেন। বড় এক্সকাভেটরের মাধ্যমে বন বিভাগের জমিতে থাকা কাঁচা, পাকা ও আধা পাকা ঘরসহ সব ধরনের স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল। এ ছাড়া অভিযানের সময় আশপাশের কিছু স্থাপনা বাসিন্দাদের নিজ উদ্যোগে দ্রুত সরিয়ে নিতেও দেখা গেছে। অভিযানে ভেঙে ফেলা ঘরের আশপাশে দাঁড়িয়ে আছেন সেখানকার বাসিন্দারা। অনেকেই নিজেদের কাছে থাকা জমির কাগজপত্র বন বিভাগের লোকজনকে দেখানোর চেষ্টা করছেন।

রিনা বেগম নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারী বিলাপ করতে করতে বলেন, তাঁর স্বামী তাঁকে ফেলে চলে গেছেন। থাকার জায়গা নেই। তাঁর একটাই ঘর, তা–ও ভেঙে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে জাহির আলী নামের এক বৃদ্ধ কিছু কাগজপত্র হাতে নিয়ে এসে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বহু বছর আগে বন্দোবস্ত পাইয়া জমিতে থাকতাছি। আমার কাছে কাগজপত্র আছে। তবুও আমাকে উচ্ছেদ কইরা বনে ভাসাইয়া দিল।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই অভিযোগ করেন উচ্ছেদের বিষয়ে তাঁদের আগে নোটিশ করা হয়নি। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঢাকা বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. সামসুল আরেফিন। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেককে নোটিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর যেসব স্থাপনা তৈরি হয়েছে, সেগুলোই উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চলবে।’