মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সিলেট শহরে বিক্ষোভ মিছিল করছেন চা-শ্রমিকেরা। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মালনিছড়া চা-বাগানের শ্রমিকেরা মিছিল বের করেন। পরে লাক্কাতুরা চা-বাগানের শ্রমিকেরা ওই মিছিলে যোগ দেন।
৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে চট্টগ্রাম, সিলেটসহ সারা দেশের ২৩১টি বাগানের চা-শ্রমিকেরা ধর্মঘট পালন করছেন। গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন তাঁরা। চা-শ্রমিকদের ধর্মঘট নিরসনে গতকাল মঙ্গলবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী। তবে বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়নি। এ কারণে আজ ঢাকায় দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করবে শ্রম অধিদপ্তর। এদিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকনেতারা।
আজ সকাল ১০টার দিকে মালনিছড়া চা-বাগানের মন্দিরের পাশে শ্রমিকদের জড়ো হতে দেখা যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একদল শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে মিছিল বের করেন। পরে লাক্কাতুরা চা-বাগানের শ্রমিকেরাও ওই মিছিলে যোগ দেন। মিছিলটি সিলেট বিমানবন্দর সড়ক হয়ে লাক্কাতুরা চা-বাগানের কার্যালয়ের সামনে এসে পৌঁছায়। সেখানে কিছু সময় অবস্থানের পর শ্রমিকেরা আবার মিছিল নিয়ে লাক্কাতুরা চা-বাগানের দিকে চলে যান।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া চা-শ্রমিক বিক্রম লোহার বলেন, ‘শ্রমিকেরা কাজ করতে প্রস্তুত। কিন্তু আমাদের প্রাপ্য মজুরি দিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে চা-শ্রমিকেরা বঞ্চিত হয়ে আসছেন। মজুরি, চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থানসহ বিভিন্ন দিকে আমাদের পিছিয়ে রাখা হয়েছে। এখন আমরা আমাদের প্রাপ্য দাবি চাইছি।’
আরেক চা-শ্রমিক মাধবী গোয়ালা বলেন, ‘আন্দোলন-ধর্মঘটের কারণে মজুরি বন্ধ হয়ে আছে। ঘরে খাবার ফুরিয়ে এসেছে। কবে সমাধান আসবে জানা নেই। এরপরও আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়েছি।’
চা-শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, তিনি ঢাকার পথে রয়েছেন। গতকাল বৈঠকে কোনো সমাধান হয়নি। আজ সরকারপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ, শ্রম অধিদপ্তর ও বাগানমালিকপক্ষ বৈঠকে বসবেন। তবে মজুরি বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন ও ধর্মঘট চলবে।
এ ব্যাপারে সিলেটের বাগানমালিকপক্ষের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউই বক্তব্য দিতে চাননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চা-বাগানের এক কর্মকর্তা বলেন, পাঁচ দিন ধরে চা উৎপাদন বন্ধ হয়ে আছে। এতে চা-শিল্পে প্রভাব পড়ছে। এমনিতেই চা-শিল্প বিভিন্ন কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর মধ্যে শ্রমিকদের এমন ধর্মঘটে এই শিল্প খাত আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাগানে নতুন পাতা গজিয়েছে। পাতাগুলো এখনই তোলা না হলে সেগুলো মান হারাবে। এ জন্য বিষয়টি এখনই সমাধান প্রয়োজন।