নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে ইতিহাস রচনা করে দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতার পর গতকাল বুধবার রাত থেকেই রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মঘাছড়ি গ্রামে বইছে খুশির জোয়ার।
মঘাছড়ি গ্রামের মেয়ে ঋতুপর্ণা চাকমার দেওয়া গোলে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। ২০ বছর বয়সী ঋতুপর্ণা ৮১তম মিনিটে ডিফেন্ডার শামসুন্নাহার সিনিয়রের থ্রো-ইনে বল পেয়ে বাঁ প্রান্তে ডি-বক্সের বাইরে থেকে হাওয়ায় ভাসানো শট নেন। ঝাঁপিয়ে তা ফেরানোর সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেন নেপালের গোলরক্ষক আনজিলা তুম্বাপো। তাঁর হাত ছুঁয়ে ক্রসবারে লেগে বল অতিক্রম করে গোললাইন। অসাধারণ এই গোল করে জয় ছিনিয়ে আনা ঋতুপর্ণা সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছেন। স্বাভাবিকভাবে মঘাছড়িতে গতকাল থেকেই বইছিল আনন্দের বন্যা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মঘাছড়ি গ্রামের সবার মুখে মুখে ঋতুপর্ণার কথা। চা-দোকানের আড্ডা, জুমখেত ও বাড়ির আঙিনা সর্বত্র কান পাতলেই ঋতুপর্ণার নাম শোনা যাচ্ছে। সাফের সেরা খেলোয়াড় হওয়ায় ঋতুপর্ণার মা বসুবতি চাকমাও আনন্দে আত্মহারা। গতকাল রাত থেকেই শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন তিনি। আজ সকাল থেকেই জনপ্রতিনিধি ও এলাকার লোকজন বাড়িতে শুভেচ্ছা জানাতে আসছেন।
বসুবতি চাকমা বলেন, ‘আজ সকাল ৯টার দিকে মেয়ে আমাদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছে। এই অর্জনে আমরা খুব খুশি। ঋতু সবার কাছ থেকে দোয়া চেয়েছে। আমি প্রতি খেলার আগে তার জন্য প্রার্থনা করি।’
কাউখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অর্জুন মনি চাকমা বলেন, ‘আমরা ঋতুপর্ণা চাকমার বাড়িতে গিয়ে মা ও পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নিয়েছি। তিনি সেরা খেলোয়াড় হওয়ায় আমরা গর্বিত।’
ঘাগড়ার মতো উৎসব আনন্দে ভাসছে জেলার নানিয়ারচরও। সাফজয়ী দলের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা নানিয়ারচরের ভুইয়ো আদাম গ্রামের মেয়ে। দেশের জয়ে বড় অবদান রাখা রুপনা হয়েছেন সাফের সেরা গোলরক্ষক। ২০২২ সালের সাফে সেরা গোলরক্ষক হন রুপনা।
রুপনা চাকমার মা কালাসোনা চাকমা লোকজনের মুখে শুনেছেন তাঁর মেয়ে এবারও সেরা গোলরক্ষক হয়েছে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে এবারও সেরা গোলরক্ষক হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। তবে খবরটা তার কাছ থেকে পাইনি। লোকজনই জানিয়েছে আমাকে। গতকাল থেকেই বিভিন্ন জন ফোন করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। খুব খুশি লাগছে। আমার মেয়ের জন্য আপনারা দোয়া করবেন।’