বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের মাঠে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছে পুলিশ। বাবুগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হান্নান মিয়া বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ মামলা করেন। তবে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুবুর রহমান আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের ঈশ্বরচন্দ্র নারায়ণ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে বিষয়টি জানান। এরপর খবর পেয়ে বাবুগঞ্জ থানার টহল পুলিশের একটি দল ওই বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে তল্লাশি করে। পরে মাঠ থেকে তিনটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি মাহাবুবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় বাবুগঞ্জ থানার এসআই হান্নান মিয়া বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছেন। মামলায় ৫৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। তবে আসামিদের নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ওসি।
খবর পেয়ে বাবুগঞ্জ থানার টহল পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে এবং অবিস্ফোরিত ককটেলগুলো উদ্ধার করে।
তবে অপর একটি সূত্র জানায়, মামলায় বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইসরত হোসেন তালুকদার ওরফে কচি তালুকদারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলার সব আসামিই স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মী।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইসরত হোসেন তালুকদার আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ কিংবা মামলা হওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। আর হলেও তো কিছু করার নেই। সারা দেশেই তো একই নাটক করছে সরকার। এটাও সেই নাটকেরই অংশ ছাড়া আর কী।’
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গতকাল রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের ঈশ্বরচন্দ্র নারায়ণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পরপর দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। এতে আশপাশের লোকজন অনেকটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
দেহেরগতি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাবুল হাওলাদার বলেন, ৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে কেদারপুর ইউনিয়নের ভুতেরদিয়া গ্রামে একটি বিয়েবাড়িতে ডাকাতি হয়। এ জন্য এলাকার লোকজনের মধ্যে ডাকাত–আতঙ্ক বিরাজ করায় গতকাল রাতে ডাকাত প্রতিরোধে তাঁরা স্থানীয় বটতলায় একটি সভা করার জন্য ঈশ্বরচন্দ্র নারায়ণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিদ্যালয়ে পৌঁছার আগে পরপর দুটি বিকট শব্দ শুনতে পান। পরে বিদ্যালয়ের মাঠে গিয়ে তিনটি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে খবর পেয়ে বাবুগঞ্জ থানার টহল পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে এবং অবিস্ফোরিত ককটেলগুলো উদ্ধার করে।