প্রকাশ্যে ইউপি চেয়ারম্যানকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় নৌকার প্রার্থীকে তলব

বি এম ফরহাদ হোসেন
 ছবি: সংগৃহীত

আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী বি এম ফরহাদ হোসেনকে তলব করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। নির্বাচনী জনসভায় নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ভূঁইয়াকে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে নৌকার প্রার্থীর কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ ও আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির প্রধান মোহাম্মদ রেজাউল হক তাঁকে তলব করেন। আগামীকাল সোমবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সশরীর হাজির হয়ে তাঁকে এ ব্যাপারে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বি এম ফরহাদ হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এবং নৌকা প্রতীকের প্রার্থী। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান। আওয়ামী লীগের তিন মনোনয়নপ্রত্যাশীসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন ইউপির সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান, বিএনপির একাধিক সাবেক নেতা-কর্মী একরামুজ্জামানকে সমর্থন দিয়ে তাঁর পক্ষে কাজ করছেন। ফরহাদ, একরামুজ্জামানসহ আসনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তলবের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২৩ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন সংস্করণে ‘চেয়ারম্যানের নাম মুছতে চান এমপি, হাত ভাঙার হুমকি আওয়ামী লীগ নেতার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি অনুসন্ধান কমিটির নজরে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের প্রার্থী বি এম ফরহাদ হোসেন ২২ ডিসেম্বর নাসিরনগরের কুন্ডা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত একটি নির্বাচনী জনসভায় কুন্ডা ইউপির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের নাম মুছে ফেলার হুমকি দিয়েছেন, এতে ওই ইউপি চেয়ারম্যান নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন তিনি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ফরহাদ হোসেনের ওই বক্তব্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৭৭ (১) অনুচ্ছেদ ও সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮–এর ১১ বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অনুসন্ধান কমিটির কাছে মনে হয়েছে। এমতাবস্থায় সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্বাচন কমিশনকে সুপারিশ করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন অনুসন্ধান কমিটি। এ বিষয়ে ২৫ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটার মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনে অনুসন্ধান কমিটির প্রধান মোহাম্মদ রেজাউল হকের কার্যালয়ে সশরীর হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

গত শুক্রবার বিকেলে কুন্ডা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন। সেখানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ভূঁইয়ার উদ্দেশে সংসদ সদস্য বলেন, ‘এই নাসিরনগর থেকে তোমার নাম মুছে যাবে।’ তাঁর বক্তব্য-সংবলিত ৬ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে ১৮ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালের নাসিরনগর উপজেলা প্রতিনিধি মুরাদ মৃধাকে ‘দেখে নেওয়ার হুমকি’ দিয়েছিলেন সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন।