ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের চর সাহাভিকারী উচ্চবিদ্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। আগুনে বিদ্যালয়টির প্রশাসনিক ভবনের নিচতলার শিক্ষক মিলনায়তনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। চর সাহাভিকারী উচ্চবিদ্যালয়ের দুটি ভবনকে আগামী রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
চর সাহাভিকারী উচ্চবিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আবদুর রহমানের বাড়ি বিদ্যালয় ভবনের পাশেই। তিনি বলেন, সকালে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে দোকানে যাওয়ার সময় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন। পরে তিনি কাছে গিয়ে জানালা দিয়ে ভেতরে তাকিয়ে আগুন জ্বলতে দেখে চিৎকার করে লোকজন ডাকেন। এ সময় তিনি দ্রুত ফায়ার সার্ভিস ও জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে সকালে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুদ্বীপ রায় বলেন, আজ সকাল ৭টার দিকে ৯৯৯–এ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যান। আগুন লাগার কারণ উদ্ঘাটনে বিএনপির আন্দোলন ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের বিরোধ—এ দুই বিষয়কে মাথায় রেখে তদন্ত করা হচ্ছে।
যে ভবনে আগুন লাগানো হয়েছে, সেটি ভোটকেন্দ্র নয় বলে জানান উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসান। তিনি বলেন, বিদ্যালয়টির আঙিনায় চারটি ভবন রয়েছে। যে ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে, ভোট হবে তার পাশের দুটি ভবনে। তবে যেহেতু একটি ঘটনা ঘটেছে, তাই ভোটের সময় কেন্দ্রটিতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে। বিদ্যালয়ে আগুনের ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে বেশ কয়েকটি বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের পিয়ন আবু বক্কর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, আগুনে শিক্ষক মিলনায়তনের ২টি কম্পিউটার, কাগজপত্রসহ ৭টি আলমারি, ২০টি চেয়ার, ২টি টেবিল ও বই পুড়ে গেছে। তবে যে জানালা দিয়ে আগুন লাগানো হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না। কারণ, সেটি তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার বন্ধ করে গিয়েছিলেন বলে জানান।
উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. জামিল আহমেদ খান বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনের জানালার পাশে একটি অকটেনের বোতল পাওয়া গেছে। তবে আগুন কী দিয়ে ধরানো হয়েছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
এদিকে এলাকার স্থানীয় লোকজনের ভাষ্যমতে, বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। বিভিন্ন আলামত নষ্ট করতে দুর্বৃত্তরা শিক্ষক মিলনায়তনে আগুন দিয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে কথা বলতে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুল হকের মুঠোফোন একাধিকবার চেষ্টা করেও বক্তব্য জানা যায়নি। বরখাস্ত হওয়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।