পর্যটন শহর কক্সবাজারে প্রথমবারের মতো ট্রেন গেছে আজ রোববার। সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে কক্সবাজারের সদরের ঝিংলজায় অবস্থিত আইকনিক স্টেশনে প্রবেশ করে এই ট্রেন। নতুন রেললাইনে প্রথম ট্রেনকে স্বাগত জানাতে দুপুর থেকে স্টেশনে এসেছিলেন হাজারো মানুষ। ট্রেন প্রবেশ করতেই তুমুল হর্ষধ্বনি, করতালি আর মুঠোফোনের আলো জ্বালিয়ে ট্রেনকে বরণ করে নেন কক্সবাজারের মানুষ।
এর আগে সকাল নয়টায় চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে এই ট্রেন ছাড়ে। তবে এটি যাত্রীবাহী কোনো ট্রেন ছিল না। এটা ছিল পরিদর্শন ট্রেন। চট্টগ্রাম থেকে পৌঁছাতে ৯ ঘণ্টা ২০ মিনিট লাগে। মূলত পরিদর্শন দল বিভিন্ন স্টেশন, সেতু, রেলপথের শেষ হওয়া নির্মাণকাজ ঘুরে দেখে। এ জন্য বিভিন্ন স্থানে বিরতি দেওয়া হয়।
১১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের আগে নতুন নির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ পরিদর্শনের জন্য এই ট্রেন চালানো হয়। নতুন রেলপথে ট্রেনকে বরণ করে নিতে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত দুই পাশে শত শত মানুষ হাজির হয়েছিলেন। নারী, পুরুষ, শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ যেন হাজির হয়েছিলেন ইতিহাসের সাক্ষী হতে। তাঁরা ফুল ছিটিয়ে ট্রেনে থাকা কর্মকর্তা ও রেলকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান।
আজকের এই যাত্রায় নতুন নির্মিত এই রেললাইন যাচাই করে দেখেন পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এ সময় তাঁরা বিভিন্ন স্টেশন, সেতু ও নির্মিত রেলপথের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন।
আজ সকাল নয়টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে এই ট্রেন কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ট্রেনটিতে সরকারি রেল পরিদর্শক রহুল কাদের আজাদ, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজমুল ইসলামসহ সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রকল্পসংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা ছিলেন। ট্রেনটিতে আটটি বগি রয়েছে।
সাধারণত দেশের কোথাও নতুন রেললাইন নির্মিত হলে পরিদর্শন অধিদপ্তর পরীক্ষা করে দেখে। অধিদপ্তর ছাড়পত্র দিলে নতুন রেলপথটি ট্রেন চলাচলের জন্য উপযোগী বলে বিবেচনা করা হয়। এরপর ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক চলাচল) ও ট্রেন চলাচল শুরু করতে পারবে৷
দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার লাইনের মধ্যে মোট প্রকল্পের কাজ ৯২ শতাংশ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন প্রকল্পটির কাজ ২০১৮ সালে শুরু হয়। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও তার আগে আগামী ডিসেম্বরের দিকে পুরোপুরি কাজ শেষ হবে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চালানোর জন্য এর আগেই বুঝিয়ে দেওয়া যাবে।