মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার একটি খালে চলন্ত লঞ্চ বৈদ্যুতিক তারের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি পাঙ্গাসিয়া খালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার পর পানিতে পড়ে নিখোঁজ হন ওই তরুণ। আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
নিহত মো. নিলয় (১৮) ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তিনি গজারিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার বন্ধুদের সঙ্গে বনভোজনে যাওয়ার কথা ছিল নিলয়ের। এ জন্য গতকাল বিকেলে নিলয়সহ তাঁর কয়েকজন বন্ধু নারায়ণগঞ্জ থেকে একটি লঞ্চ ভাড়া করেন। লঞ্চটি তাঁরা নারায়ণগঞ্জ থেকে নিয়ে আসছিলেন। হোগলাকান্দি গ্রামসংলগ্ন পাঙ্গাসিয়া খাল হয়ে আসছিলেন তাঁরা। খালের ওপর বৈদ্যুতিক তার ঝুলছিল। তারের নিচ দিয়ে লঞ্চটি অতিক্রম করার সময় লঞ্চের ওপরে থাকা নিলয় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পানিতে পড়ে তলিয়ে যান।
গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রিফাত মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল খবর পেয়ে রাত তিনটার দিকে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। রাতে উদ্ধারকাজ সম্ভব না হওয়ায় ভোরে শুরু করি। সাড়ে পাঁচটার দিকে লাশ উদ্ধার করে পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে দিই।’ তিনি বলেন, বিদ্যুতায়িত হয়ে ওই কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এতে পল্লী বিদ্যুতের গাফিলতি রয়েছে। নিলয়ের বন্ধু এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন, শুকনা মৌসুমে পানি খালের নিচে থাকে। তখন সহজেই নৌযান যাতায়াত করতে পারে। বর্ষা মৌসুমে খালে পানি বাড়লে নৌযান তারের সঙ্গে আটকে যায়। এ জন্য প্রতিবছরই বর্ষায় এখান থেকে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ট্রান্সমিটার খুলে নেওয়া হয়। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এবার তা করেনি। নিলয় ভেবেছিলেন, তারে কোনো বিদ্যুৎ নেই। তাই তিনি হাত দিয়ে সেটি সরাতে গিয়েছিলেন। তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
গজারিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক অভিলাষ চন্দ্র পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এখানে গত মার্চ মাসে এসেছি। প্রতিবছর এখানে বিদ্যুৎ–সংযোগ খুলে রাখা হতো কি না, বিষয়টি জানা নেই। তবে আমার জানামতে, কখনো কোথাও বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয় না।’