রাজশাহীর বাঘায় আওয়ামী লীগের এক নেতা হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামানসহ নেতাদের জড়িয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বক্তব্যের প্রতিবাদে বাগমারায় আয়োজিত সমাবেশ পণ্ড হয়েছে। রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হকের অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ ওই সভার আয়োজন করে। কিন্তু বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারীদের বাধায় তাঁরা সমাবেশ করতে পারেননি।
আজ শনিবার বিকেলে বাগমারার ভবানীগঞ্জ নিউমার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশি পাহারায় এনামুলের অনুসারীরা সমাবেশ করার চেষ্টা করলেও প্রতিপক্ষের ধাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বর্তমান সংসদ সদস্যের অনুসারীদের ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। পরে সেখানে সমাবেশ করেন সংসদ সদস্যদের অনুসারীরা। সমাবেশ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, আজ বিকেলে সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হকের অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন। এনামুলের ফুফাতো ভাই ও ভবানীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক মণ্ডলের নেতৃত্বে তাঁরা প্রথমে ভবানীগঞ্জ নিউমার্কেট এলাকা থেকে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে প্রতিপক্ষের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় সংসদ সদস্যের অনুসারীরা ধাওয়া দিলে তাঁরা নিউমার্কেটের ভেতরে ঢুকে পড়েন।
সন্ধ্যার আগে পুলিশি পাহারায় নিউমার্কেটর মূল ফটকে এনামুলের অনুসারী ১০–১২ জন নেতা আবার সমাবেশ করার চেষ্টা করলে প্রতিপক্ষের কয়েকজন নেতা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে এনামুলের অনুসারীরা মার্কেটের ভেতরে ঢুকে ফটকে তালা দিয়ে নিজেদের রক্ষা করেন। তখন সমাবেশস্থল দখল করে সংসদ সদস্যের অনুসারী নেতারা সমাবেশ করেন। সমাবেশ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে কাজ করার অভিযোগ তুলে তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া বাগমারায় দলীয় রাজনীতি নোংরা করা ও সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টার অভিযোগ করা হয়।
সমাবেশে সংসদ সদস্যের অনুসারী জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘বাগমারায় কোনো রাজনৈতিক সহিংসতা নেই। সবাই সহাবস্থানে আছেন। বাঘার বিষয়টিকে বাগমারায় এনে এনামুল ও অনিল সরকারের অনুসারীরা বিভেদ সৃষ্টি ও সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন; কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।’
অন্যদিকে এনামুলের অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক নূরুল ইসলাম বলেন, তাঁদের ওপর হামলা করা হয়েছে। তাঁদের সমাবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
গত সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার বিষয়টি স্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, এটা কোনো অপরাধ ছিল না। অবাঞ্ছিত ঘোষণার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানান।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, পুলিশের হস্তক্ষেপে বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।