সহপাঠীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে
সহপাঠীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে

চুয়েট ক্যাম্পাসে সব রাজনৈতিক সংগঠনকে বয়কটের ডাক শিক্ষার্থীদের

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থী বহনকারী বাসে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা এলাকায় জড়ো হন তাঁরা। পরে রাত দেড়টা পর্যন্ত মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা সহপাঠীর ওপর হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে সব রাজনৈতিক সংগঠনকে বয়কটের ঘোষণা দেন।

গতকাল রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকায় চুয়েট শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসে ছাত্রলীগের ২০ জনের একটি দল হামলা করে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এ সময় হামলাকারীরা বাসে ঢুকে নারী শিক্ষার্থীসহ কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে। যাওয়ার সময় তিন শিক্ষার্থীর হাতে থাকা মুঠোফোন কেড়ে নেয়। হামলায় ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁদের মধ্যে সাতজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভে নামেন অন্য শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা চুয়েটে ছাত্রলীগসহ সব রাজনৈতিক সংগঠনকে বয়কটের ঘোষণা দেন। পাশাপাশি হল ত্যাগ না করারও ঘোষণা দেন তাঁরা।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বহনকারী বাসে হামলা করা হয়। মঙ্গলবার রাত ৯টায় চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকায়

পুরকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রামে আন্দোলনরত অবস্থায়ও আমাদের চুয়েটের অনেকের ওপর হামলা করা হয়। রাতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা চুয়েটের বাসে আমাদের সহপাঠীদের ওপর হামলা করে ও আমার বোনদের লাঞ্ছিত করে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে চুয়েটে সব ছাত্ররাজনীতি ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকবে। আমরা সব রাজনৈতিক সংগঠনকে বয়কট ঘোষণা করলাম। কোটা আন্দোলনের যৌক্তিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করব না। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

হামলার শিকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুরকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাশাক আল আবিদ বলেন, ‘বাস ছাড়ার মুহূর্তে কয়েকটি মোটরবাইকে প্রায় ২০ জন ছাত্রলীগের কর্মী আমাদের বাস আটকায়। তখন পাঁচ–সাতজন বাসের সামনে দিয়ে উঠেই আমাদের সবাইকে লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে। সন্ত্রাসীরা আমাদের বোনদেরও তখন ছাড় দেয় নাই। আমি কথা বলায় আমাকে নিচে নামিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে।’

কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছাত্রলীগের পাঁচ-সাতজন বাসে উঠে সামনের দিকে বসা মেয়েদের লাঠি দিয়ে মারতে থাকে বলে অভিযোগ করেন তড়িৎকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কণিকা আক্তার। তিনি কাঁদতে কাঁদতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ সময় আমার হাতে থাকা মোবাইল তাঁদের একজন কেড়ে নেয়। প্রায় ১০ মিনিট আটকে রাখার পর তারা বাস ছেড়ে দিলেও আমাদের মোবাইলগুলো তাদের কাছে রেখে দেয়।’