সুনামগঞ্জে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ চলাকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক। বুধবার সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজের বিভিন্ন প্রকল্প ঘুরে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক বলেছেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে কাজটি করব। এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সব কর্মকর্তার ছুটি বাতিল। প্রয়োজনে অন্য জায়গা থেকে কর্মকর্তারা সুনামগঞ্জে আসবেন। আমি আসব, প্রতিমন্ত্রী আসবেন, সচিব আসবেন। ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের সময় পাউবোর প্রধান প্রকৌশলী সুনামগঞ্জে অফিস করবেন।’
এ কে এম এনামুল হক বলেন, সুনামগঞ্জে পাউবোর কোনো জনবল–সংকট থাকবে না। হাওরের ফসল ঘরে ওঠার আগপর্যন্ত পাউবোর কর্মকর্তারা কোনো ছুটি পাবেন না। বাঁধের নির্মাণকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পাউবোর অতিরিক্ত ২৬ জন কর্মকর্তা মাঠে আছেন। প্রয়োজনে আরও কর্মকর্তারা আসবেন।
বাঁধ নির্মাণকাজে কোনো অনিয়ম ও গাফিলতি সহ্য করা হবে না মন্তব্য করে উপমন্ত্রী বলেন, অনিয়মের প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওরের ফসল রক্ষায় স্থায়ী ও টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তিনি হাওরের কৃষকদের প্রতি খুবই আন্তরিক। আওয়ামী লীগ সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। বাংলাদেশ একসময় খাদ্যে বিদেশনির্ভর ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে।
উপমন্ত্রী পরে একই উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালি এলাকায় বাঁধ নির্মাণের সম্ভাব্যতার ব্যাপারে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। যদিও এর আগে টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসন সেখানে কোনো বাঁধ নির্মাণ করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিল।
পরিদর্শনকালে উপমন্ত্রীর সঙ্গে সুনামগঞ্জ-১ (ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, পাউবোর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহীদুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পাউবোর পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলার ৪৮টি হাওরে ১ হাজার ৭৬টি প্রকল্পের মাধ্যমে এবার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। এ জন্য প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে ২০৫ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ৫৪ শতাংশ কাজ হয়েছে। হাওরে বাঁধ নির্মাণের সময়সীমা ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি।