হবিগঞ্জ শহরের বাইপাস সড়কের পাশে প্রায় ১০০ ফুট প্রস্থ সরকারি খাল ভরাটে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। রাতের আঁধারে ভরাটকাজ করা ব্যক্তিদের ভরাট বন্ধের পাশাপাশি আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আখতারুজ্জামান স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, পরিবেশগত ছাড়পত্র ব্যতীত সরকারি খাল-জলাশয় ভরাট করে পরিবেশ দূষণ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার ক্ষতি করা হয়েছে। কেন অভিযুক্ত চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি খাল ভরাটের কাজ থেকে বিরত থাকার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আখতারুজ্জান প্রথম আলোকে বলেন, চিঠি পাওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে খাল ভরাটের কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোটিশ পাওয়া ওই চারজন হলেন হবিগঞ্জ শহরের গার্নিংপার্ক এলাকার বাসিন্দা সুনীল বণিক, তাঁর ভাতিজা সৌরভ বণিক, জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও এলাকার দুলাল রায় চৌধুরী ও হবিগঞ্জ শহরের আনোয়ারপুর এলাকার জয়নাল আবেদীন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ ও সরেজমিন দেখা যায়, শহরের বাইপাস সড়কের পাশে (কালীগাছতলা এলাকায়) সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আধা কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১০০ ফুট প্রস্থ একটি দীর্ঘ খাল আছে। খালটি শহরের পানিনিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যম। খালের পশ্চিম পাশের ভূমির মালিক আমেরিকাপ্রবাসী সুনীল বণিক। তাঁর জায়গায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য সরকারি খালের প্রায় ২০০ ফুট ভরাট করেছেন তিনি। প্রতিদিন রাতের আঁধারে ট্রাক দিয়ে মাটি ফেলা হচ্ছে খালে। বিষয়টি প্রথমে নজরে আসে হবিগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর শাহ সালাউদ্দিনের। গত শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি দেখেন, একসঙ্গে কয়েকটি ট্রাক দিয়ে মাটি ফেলে খালটি ভরাট করা হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি তিনি স্থানীয় পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন ও জেলা প্রশাসনকে জানান।
খবর পেয়ে প্রশাসনের লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভরাটের আলামত পেলেও ভরাটকারী ব্যক্তিদের কাউকে পাননি। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁরা পালিয়ে যান। তবে এলাকাবাসী প্রশাসনকে জানান, এ মাটি ভরাটের কাজ করছেন শহরের কালীগাছতলা এলাকার বাসিন্দা ও আমেরিকাপ্রবাসী সুনীল বণিক। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার প্রথম আলোয় হবিগঞ্জে রাতে সরকারি খাল ভরাট শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর অভিযুক্ত চারজনকে নোটিশ দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।