নারায়ণগঞ্জে ট্রলারডুবির ঘটনায় আরও দুই লাশ উদ্ধার, এখনো নিখোঁজ ৩

ট্রলারডুবির খবরে স্বজন ও স্থানীয়দের ভিড়। শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের চরকিশোরগঞ্জ এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের চরকিশোরগঞ্জে মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ জান্নাতুল মারওয়ার (৮) লাশ পাওয়া গেছে। আজ রোববার সকাল সাতটার দিকে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে কোস্টগার্ড।

এদিকে সকাল ১০টার দিকে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরঝাপটা এলাকার মেঘনা নদী থেকে নিখোঁজ সাব্বির হোসেনের (৪০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো শিশুসহ তিনজন নিখোঁজ রয়েছে।

জান্নাতুল মারওয়া মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ফুলদি গ্রামের বোরহান উদ্দিনের মেয়ে। সাব্বিরদের বাড়ি রংপুরের কমাছপাড়া এলাকায়। তিনি গজারিয়ায় আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।

এর আগে গতকাল শনিবার সকালে একই দুর্ঘটনায় ওই এলাকার মফিজুল হকের স্ত্রী ও সাব্বির হোসেনের বোন সুমনা আক্তারের (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ মফিজুল হকের দুই মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া (৬) ও সাফা আক্তার (৪) ও সাব্বিরের ছেলে রিমাদ (২)।

বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (নারায়ণগঞ্জ বন্দর) ওবায়দুল করিম খান আজ সকাল আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সারা রাত নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ, নৌ পুলিশের সদস্য ও ডুবরিরা কাজ করেছেন। আজ সকালে ওই শিশুর লাশ চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল এলাকার একটি খালে ভেসে ওঠে। কোস্টগার্ড ও পরিবারের সদস্যরা লাশটি উদ্ধার করেছেন। তিনি আরও বলেন, এ লাশ ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে পাওয়া গেল। ধারণা করা হচ্ছে, অন্যদের সন্ধানও এদিকে পাওয়া যেতে পারে।

ওবায়দুল করিম খান বলেন, সকাল ১০টার দিকে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরঝাপটা এলাকার মেঘনা নদী থেকে আরেকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

গত শুক্রবার বিকেলে মফিজুল হক তাঁর স্ত্রী, সন্তান, স্বজনসহ ১১ জন নিয়ে ট্রলারে করে মেঘনা নদীতে ঘুরতে বের হন। ঘুরতে ঘুরতে তাঁদের ট্রলার চরকিশোরগঞ্জ এলাকায় আসে। সেখান ঘোরাঘুরি শেষে ট্রলারটি সন্ধ্যার পর গজারিয়ার দিকে যাচ্ছিল। সে সময় নারায়ণগঞ্জ থেকে বালু নিতে মুন্সিগঞ্জের বালুমহালের দিকে আসা একটি বাল্কহেড ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে ১১ যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতায় পাঁচজন তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হন ছয়জন।

শুক্রবার রাতভর মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজাখুঁজি করেন স্বজনেরা। সকালে সুমনার লাশ পাওয়ার পর অন্যদের খোঁজে উদ্ধারকারীদের পাশাপাশি স্বজনেরাও ট্রলার নিয়ে খোঁজা শুরু করেন।

জান্নাতুল মারওয়ার বড় চাচা জাহেদুল বলেন, মারওয়ার লাশটি পেয়েছেন। একেবারে ফুলে গেছে। এখনো নিখোঁজ জান্নাতুল মাওয়া ও সাফা। নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর কাছেও অনুরোধ, তারা যেন উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যায়।