আ.লীগ বলছে, ভোট যে-ই পাক, জয়ী তারা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য উপনির্বাচন উপলক্ষে গতকাল সরাইলে উপজেলা প্রশাসন মতবিনিময় সভা করে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচন উপলক্ষে গতকাল সরাইল উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মতবিনিময় সভা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের অনেক উৎসাহী নেতা মাঠে বলে বেড়াচ্ছেন, ভোট যে-ই পাক না কেন, ফলাফল আসবে তাঁদের দলের প্রার্থীর পক্ষেই।

আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য উপনির্বাচন উপলক্ষে গতকাল সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত উদ্বুদ্ধকরণ ও মতবিনিময় সভায় জিয়াউল হক মৃধা এ অভিযোগ তোলেন।

জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘তবে আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে যে আশ্বাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন, যে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, তাতে পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রেখে আমরা মাঠে নেমে গেছি, মাঠে আছি।

‘সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে। এখানে এর ব্যত্যয় ঘটবে না। প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেখানেই কোনো সমস্যা হবে, আমাদের অবহিত করবেন, আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’
মো. শাহাগীর আলম, জেলা প্রশাসক

যাঁর যাঁর ভোট সে প্রয়োগ করুক, এটাই জনগণের দাবি। উৎসবের আমেজ নিয়ে, ঈদের আমেজ নিয়ে মা-বোনেরা ভোটকেন্দ্রে যাবেন। তবে আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব—সে পরিবেশ যেন বজায় থাকে। আমি নেতিবাচক কিছু বলতে চাই না। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমরা আপনাদের সরকারকে অভিনন্দন জানাব।’

গতকাল দুপুরে স্থানীয় সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. সাহাগীর আলম। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার নাসরিন সুলতানা, সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম প্রমুখ।

সভায় উপনির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে জিয়াউল হক মৃধা ছাড়াও জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল হামিদ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির রাজ্জাক হোসেন বক্তৃতা করেন। সভায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য এবং গ্রাম পুলিশ অংশ নেন। সভা সঞ্চলনা করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালিদ জামিল খান।

উপনির্বাচনে মোট পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে এ তিন প্রার্থীর বাড়ি সরাইল উপজেলায়।

জেলা প্রশাসক মো. শাহাগীর আলম বলেন, ‘সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে। এখানে এর ব্যত্যয় ঘটবে না। প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেখানেই কোনো সমস্যা হবে, আমাদের অবহিত করবেন, আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’

এর আগে সকালে আশুগঞ্জ উপজেলায় সভা হয়। সেখানে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম এবং জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম অংশ নেন। তাঁরা আশুগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি গত ১১ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি এ শূন্য আসনে উপনির্বাচন হয়।

আলোচিত সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার গত ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যান। এতে আসনটি শূন্য হয়। আগামী ৫ নভেম্বর এ আসনে ফের উপনির্বাচন হবে। এখানে গত উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হয়েছিল ইভিএম পদ্ধতিতে। এবার ভোট গ্রহণ হবে ব্যালটের মাধ্যমে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসনটি সরাইল উপজেলার নয়টি এবং আশুগঞ্জ উপজেলার আটটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখানে মোট ভোট রয়েছে ৪ লাখ ১০ হাজার ৭২টি। এর মধ্যে সরাইলে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬০৫ ভোট ও আশুগঞ্জে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৬৭ ভোট।