এবার ‘কাঙ্ক্ষিত’ পদ না পাওয়া নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় মারধরের অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা গত রোববার ক্যাম্পাসের গ্রন্থাগারের পূর্ব পাশে গেলে আন্দোলনকারীরা তাঁকে মারধর করেন এবং তাঁর মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটিতে ‘কাঙ্ক্ষিত’ পদ না পাওয়া ৯ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক একজন নেতা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের মতিহার থানায় গিয়ে তিনি মারধরের লিখিত অভিযোগ দেন।

মারধরের শিকার ওই নেতার নাম মো. আরব হোসেন। তিনি ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহসম্পাদক ছিলেন তিনি।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

লিখিত অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি কাজী আমিনুল হক ওরফে লিংকনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া সদ্য ঘোষিত কমিটির সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম ও তাওহীদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদ ও শামীম হোসেন, শাহ মখদুম হল শাখা ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক মো. তানজিল হোসেন, ছাত্রলীগের কর্মী আরবি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শামিম মাহবুব, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মইনুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে সংঘবদ্ধ হয়ে তাঁর ওপর হামলা করা হয়। আসামিরা জিআই পাইপ ও লোহার রড দিয়ে তাঁকে মারধর করেন। এতে মাথা ও চোয়ালে গুরুতর আঘাত পান তিনি। এ সময় অভিযুক্তদের মধ্যে তানজিল তাঁর গলার চেইন ছিনিয়ে নেন। রাজুর জিআই পাইপের আঘাতে তাঁর মোবাইল ভেঙে যায়। একপর্যায়ে আরব তাঁদের হামলা থেকে বাঁচতে পালানোর চেষ্টা করলে অভিযুক্ত নেতা-কর্মীরা তাঁকে ধাওয়া করেন। পরে তাঁরা তাঁর মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। প্রথমে আঘাত করেন কাজী আমিনুল লিংকন।

অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অজ্ঞাতনামা আরও ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। এতে তাঁর ওপর হামলা, মারধর, হত্যাচেষ্টা, স্বর্ণালংকার ছিনতাই এবং মোবাইল ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের অভিযোগ করেন তিনি।

ছাত্রলীগ নেতা আরব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ওই দিন ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন। তাঁরা সেখানে আছেন, তিনি জানতেন না। তিনি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। অতর্কিত তাঁর ওপর হামলা করা হয়। তাঁরা বলতে থাকেন তিনি নাকি বর্তমান সভাপতির লোক। তিনি হামলার বিচার দাবি করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি কাজী আমিনুল হককে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। আরেক ছাত্রলীগ নেতা শাহিনুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

প্রায় সাত বছর পর গত শনিবার রাতে ৩৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। পরদিন রোববার বেলা ১১টার দিকে ওই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। ওই সভাপতির অনুসারী একজনকে আন্দোলনকারীরা মারধর করেছিলেন। ওই মারধরের ঘটনায় আজ থানায় অভিযোগ দিলেন ভুক্তভোগী আরব হোসেন।