ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাব

চুয়াডাঙ্গায় এক দিনে তাপমাত্রা কমেছে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস

চুয়াডাঙ্গা জেলার মানচিত্র
চুয়াডাঙ্গা জেলার মানচিত্র

দেশের অন্যতম উষ্ণতম জেলা চুয়াডাঙ্গায় আজ রোববার ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সারা দিনে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। এক দিনের ব্যবধানে জেলায় তাপমাত্রা কমেছে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে তাপমাত্রা স্বাভাবিকে নেমে এসেছে। শুরু হয়েছে বৃষ্টি।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ রোববার দিবাগত মধ্যরাত থেকে জেলায় ভারী বর্ষণ শুরু হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় অতিক্রম করার পর আগামী ৪৮ ঘণ্টায় অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি ইউনিয়নে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঝোড়ো হাওয়ার কারণে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো), মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে স্থানীয় আবহাওয়ায় বেশ প্রভাব পড়েছে। এক দিনের ব্যবধানে তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে তাপমাত্রা স্বাভাবিকে (৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে) নেমে আসে। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতির কারণে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় দিনব্যাপী ভ্যাপসা গরম অনুভূত হয়। ঘূর্ণিঝড় অতিক্রম করার পর পরিস্থিতির আরও পরিবর্তন ঘটতে পারে।

এদিকে পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার আজ বেলা তিনটায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৩৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সন্ধ্যা ছয়টায় আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিট থেকে ৫টা পর্যন্ত ২ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল শনিবার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৭ শতাংশ; অর্থাৎ এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা বেড়েছে ৩২ শতাংশ।

স্থানীয় প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে সংরক্ষিত চলতি মে মাসের ২৬ দিনের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১ মে এক দিন অতি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস); ২, ৩, ৫, ২৪ ও ২৫ মে পাঁচ দিন তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস); ৪, ১৭, ১৯ ও ২৩ মে চার দিন মাঝারি তাপপ্রবাহ (৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ৬, ১৪, ১৫, ১৬, ২১ ও ২২ মে ছয় দিন মৃদু তাপপ্রবাহ (৩৬ দশমিক ২ থেকে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত) রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া ৬ মে ২৬ মিলিমিটার, ৭ মে ১৫ মিলিমিটার, ৯ মে ৪ মিলিমিটার এবং ১২ ও ২১ মে ১ মিলিমিটার করে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এবং সর্বশেষ আজ রোববার বিকেলে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ২ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি মে মাসে ছয় দিনে জেলায় মোট ৪৯ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।