রূপগঞ্জে তেলবাহী জাহাজে আগুনে দগ্ধ আরও দুই শ্রমিকের মৃত্যু

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে নোঙর করা তেলবাহী জাহাজের ট্যাংকার বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই শ্রমিক মারা গেছেন। রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার দুপুর ও রাতে তাঁদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট তিন শ্রমিকের মৃত্যু হলো।

মৃত তিনজন হলেন—সাভারের পলাশবাড়ি গ্রামের হুমায়ুন কবির (৫৪), ভোলার লালমোহন উপজেলার ফুলবাগিচা গ্রামের মো. রুবেল (৩৮) ও শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার তাজুল ইসলাম ওরফে লিয়ন (২০)।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত হুমায়ুন কবিরের শরীরের ৩০ শতাংশ, মো. রুবেলের ৪৫ শতাংশ ও তাজুল ইসলামের শরীরের ৬৭ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

এ ঘটনায় দগ্ধ অন্য শ্রমিকেরা হলেন—আবদুল মান্নান (২৩), ইমতিয়াজ আহমেদ (৪২), সোহেল (৩৮), মো. নাজমুল (৩৩) ও রাকিব হাসান (২৪)। তাঁদের মধ্যে ইমতিয়াজের শরীরের ৩০ শতাংশ ও সোহেলের শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাঁদের সবার শ্বাসনালি পুড়ে গেছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। দগ্ধ আবদুল মান্নান, মো. নাজমুল ও রাকিব হাসান বর্তমানে সুস্থ।

চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বলেন, ৪ জুন দগ্ধ আট শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে তিন শ্রমিককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি পাঁচ শ্রমিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে গত মঙ্গলবার দুপুরে তাজুল ইসলাম, গতকাল রাত ১০টায় হুমায়ুন কবির এবং দিবাগত রাত একটায় মো. রুবেলের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ আরও দুই শ্রমিক চিকিৎসাধীন। তাঁরাও শঙ্কামুক্ত নন।
ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, হুমায়ুন কবির ও রুবেলের মৃতদেহ দুটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

এর আগে ৩ জুন রাত দেড়টার দিকে রূপগঞ্জের দড়িকান্দি এলাকায় একটি জেটিতে নোঙর করা অবস্থায় ‘ও টি সাংহাই-৮’ নামে তেলবাহী একটি ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ওই জাহাজে কর্মরত অন্তত আটজন শ্রমিক দগ্ধ হন।

জাহাজটির শ্রমিকেরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে তেল নরসিংদীতে পৌঁছে দেওয়ার পর জাহাজটি রূপগঞ্জের নিজস্ব জেটিতে রাখা হয়। রাত দেড়টার দিকে হঠাৎ ইঞ্জিন রুমে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তের মধ্যে জাহাজে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন দেখে জাহাজে থাকা অনেকেই শীতলক্ষ্যা নদীতে লাফিয়ে পড়েন৷ পরে সহকর্মীদের সহযোগিতায় সাঁতরে তাঁরা তীরে ওঠেন। এর মধ্যেই কয়েকজন দগ্ধ হন।