নরসিংদীর রায়পুরায় ঘরের দরজা ভেঙে শিশুপুত্রের গলায় ছুরি ধরে এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। তবে গত পাঁচ দিন ধরে ওই গৃহবধূর বাবা লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানা-পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও মামলা নিচ্ছিল না পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ স্থানীয় সাংবাদিকদের শরণাপন্ন হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এর পরই লিখিত অভিযোগটি আজ শনিবার সকালে মামলা হিসেবে নেন রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর বাবা মামলার বাদী, এতে দুজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন রায়পুরার মির্জাপুর ইউনিয়নের মৃত রাশেদ মিয়ার ছেলে শরিফ হাসান (২৫) এবং মৃত জামাল মিয়ার ছেলে শাহ পরান (২২)। তাঁরা দুজন এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে রায়পুরার মির্জাপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার রাতে ওই গৃহবধূ তাঁর স্বামীর বাড়িতে ছয় ও আড়াই বছর বয়সী দুই ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত দুইটার দিকে শরিফ হাসান ও শাহ পরান তাঁর ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে ছয় বছর বয়সী ছেলের গলায় ছুরি ধরে ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূর মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলেন তাঁরা। পরে ছেলেদের সামনেই একাধিকবার ধর্ষণ করেন ওই দুজন। ধর্ষণে বাধা দিলে ওই গৃহবধূকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাঁকে হত্যার চেষ্টা এবং হাতে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করা হয়। ঘটনা কাউকে জানানো হলে তাঁকে এবং ছেলেদের হত্যার হুমকি দিয়ে তাঁরা দুজন চলে যান।
ছয় ও আড়াই বছর বয়সী দুই ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন ওই গৃহবধূ। রাত দুইটার দিকে শরিফ হাসান ও শাহ পরান তাঁর ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ প্রথম আলোকে বলেন, ‘শরিফ আর শাহ পরান মিলে ওই রাতে আমাকে ছেলেদের সামনেই ধর্ষণ করে। এই ঘটনার পর মঙ্গলবার থানায় গিয়ে বিস্তারিত জানাই এবং লিখিত অভিযোগ দিই। ওই সময় থানা থেকে জানানো হয়, পরদিন বুধবার সকালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার জন্য কল দেওয়া হবে। পরদিন সকালে থানা থেকে কল দিয়ে আমাকে জানানো হয়, আজ আসার দরকার নেই। কিন্তু শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কল বা পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিককে ঘটনা খুলে বলি। এরপরই রায়পুরা থানার পুলিশ আমাদের ডেকে মামলা নিয়েছে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রায়পুরা থানার ওসি আজিজুর রহমান জানান, লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মামলা নিতে বিলম্বের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে কিছুটা দেরি হয়েছে।