প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের পক্ষে প্রতীক সংবলিত পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। শনিবার কুড়িগ্রামের চিলমারীতে
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের পক্ষে প্রতীক সংবলিত পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। শনিবার কুড়িগ্রামের চিলমারীতে

কুড়িগ্রামে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর পোস্টারে ছেয়ে গেছে এলাকা

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও প্রার্থীদের মনোনয়ন ও প্রতীক বরাদ্দ চূড়ান্ত হয়নি। এর আগেই কুড়িগ্রাম-৪ (চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর) আসনের সংসদ সদস্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের পক্ষে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে পোস্টার লাগানো হয়েছে। এমন পোস্টারে তাঁর নির্বাচনী এলাকার উপজেলা শহরগুলো ছেয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী বলছেন, প্রতিমন্ত্রীর এমন কাণ্ডে তাঁরা বিব্রত।

গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার রৌমারী ও চিলমারী উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন অলিগলিতে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। এসব নির্বাচনী পোস্টারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের রঙিন ছবি আছে। আবার কিছু কিছু পোস্টারে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছবিও দেখা গেছে। এসব পোস্টারে লেখা ‘অনেক অর্জন আমাদের, বাকি আরও অনেক কাজ। ব্রহ্মপুত্র সেতু ও রেললাইনের জন্য মো. জাকির হোসেন এমপিকে নৌকা মার্কায় ভোট দিন।’

স্থানীয় লোকজন বলছেন, তফসিল ঘোষণার আগেভাগে গত মঙ্গলবার প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের লোকজন এলাকায় এসব পোস্টার সাঁটানোর কাজ করেছেন। কিছু পোস্টারে ‘প্রচারে: কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সর্বস্তরের উন্নয়নপ্রত্যাশী জনগণ’ লেখা থাকলেও কিছু কিছু পোস্টারে প্রচারকারীর নাম-পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

কুড়িগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগের একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আমজাদ হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার আগেই প্রার্থী হিসেবে নিজের নামে দলীয় প্রতীকে ভোট চেয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী দলকে এবং ভোটারদের বিব্রত করেছেন। সরকারের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী হয়ে তিনি দলীয় সভানেত্রীর অনুমোদনের আগেই কীভাবে এমন পোস্টারিং করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন করেছেন।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আজ বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল ধরেননি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাফর আলী বলেন, ‘সরকারের একজন দায়িত্বশীল প্রতিমন্ত্রী কেন এমন কাজটি করলেন, আমরা এটা ভেবেও বিব্রত বোধ করছি।’

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জিলহাজ উদ্দিন বলেন, দলীয় প্রতীক বরাদ্দ চূড়ান্ত হওয়ার আগেই নিজের নামে পোস্টার ছাপিয়ে ভোট চাওয়া নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন। নির্বাচন কমিশন থেকে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার বিভাগে এ বিষয়ে একটি নীতিমালা পাঠানো হয়েছে। যদি কেউ দলীয় প্রতীকসহ নিজ নামে ভোট চেয়ে পোস্টারিং করে থাকেন, তবে রোববার থেকে সেগুলো নামিয়ে ফেলা হবে বলে তিনি জানান।