‘এ আনন্দ প্রকাশ করার মতো ভাষা আমার জানা নেই’

কাওসার: দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই একটি দোকানে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি দুর্ঘটনা। গিয়ে দেখি কয়েকজন মারা গেছেন। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাতে সাহায্য করি। সে সময় টিস্যু পেপারে প্যাঁচানো হার দেখতে পাই।

কাওসার: হারের মালিককে খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। কিন্তু অনেকে হারটি দাবি করেন। তাই প্যানেল মেয়র আইয়ুব আলীর কাছে জমা রাখি।

কাওসার: প্যানেল মেয়র আইয়ুব আলী হারের মালিককে খুঁজে বের করেন। হারের মালিক ছিলেন লিটন মণ্ডল (৩৮)। এই হার যে দোকানে তৈরি করা হয়েছে, সেই দোকানদারের মাধ্যমে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। নিহত লিটন মণ্ডল সেই দোকানের কর্মচারী ছিলেন। পরে জেনেছি, হারের ওজন ১ ভরি ৫ আনা। আমার ভালো লাগছে যে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের হাতে তুলে দিতে পেরেছি। তাঁরা মিষ্টি খাওয়ার জন্য কিছু টাকা দিতে চেয়েছিলেন; কিন্তু আমি নিইনি।

কাওসার: এ অনুভূতির কথা আমি বলে বোঝাতে পারব না। এ আনন্দ প্রকাশ করার মতো কোনো ভাষা আমার জানা নেই।

কাওসার: মা-বাবার কাছ থেকে এই শিক্ষা পেয়েছি। তাঁদের কাছে শিক্ষা পেয়েছি, পথেঘাটে কোনো জিনিস পেলে সেটা আসল মালিকের কাছে ফেরত দিতে হবে।

কাওসার: এর আগেও খাড়াকান্দি টাওয়ারের কাছে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ওই দুর্ঘটনায় আহত এক প্রাইভেট কারের চালকের মুঠোফোন, মানিব্যাগ ফেরত দিয়েছিলাম।

কাওসার: বাবা মারা গেছেন। আমার দুই ছেলে। একজন দশম শ্রেণিতে পড়ে, অন্যজন সপ্তম শ্রেণিতে। স্ত্রীর নাম শাবানা আক্তারী।

কাওসার: আমাদের তেমন একটা বাজার খরচ লাগে না। জমির ধান, পেঁয়াজ খাই। বাকিটা বিক্রি করে বাজারসদাই করি। সন্তানদের পড়ালেখা করাই। তবে অনেক সময় টাকার অভাবে সন্তানদের প্রাইভেট পড়াতে পারি না।

কাওসার: না, করেন না। স্ত্রীও সংসারের অভাব ঘোচানোর চেষ্টা করেন। হাঁস-মুরগি পালেন। আগে ছাগল পালতেন। আমরা দুজন আগে গরুও পালন করেছি। পারিবারিক কারণে গরু বিক্রি করতে হয়েছে। পরে আর কিনতে পারিনি।