বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন ভারতের কাছে বাংলাদেশ জিম্মি থাকার মতো অবস্থায় ছিল। জুলাই বিপ্লবের পর ভারত আবার একের পর এক ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তবে আমরা এক ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। আমরা লড়াই করব ও সংগ্রাম চালিয়ে যাব।’
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের চুনকুটিয়া চৌরাস্তা এলাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘দেশীয় পণ্য কিনে হও ধন্য’ ব্যানারে ভারতীয় পণ্য বর্জন ও দেশি পণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায়।
বাংলাদেশ প্রশ্ন এলেই ভারতে রসুনের মতো সবাই এক হয়ে যায় উল্লেখ করে রুহুল কবির বলেন, ‘এর কারণ একটাই তা হলো শেখ হাসিনা কেন বাংলাদেশের মসনদে নেই। শেখ হাসিনা মোদি ও মমতাদের কাছে এত প্রিয় কেন? এর কারণ শেখ হাসিনা বিনা পারিশ্রমিকে ও বিনা টাকায় ভারতকে যা দিয়েছে, সেটা জাতীয়তাবাদী চিন্তার কোনো মানুষ কখনো দেবে না।’
ভারতকে সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বিনা দরপত্রে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে রুহুল কবির বলেন, মমতা তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে দিচ্ছেন না। সে জন্য তো হাসিনা কোনো কথা বলেননি। সীমান্ত হত্যাসহ ভারতীয় আগ্রাসন নিয়েও হাসিনা কোনো কথা বলেননি। এসব কারণেই হাসিনা ভারতের কাছে এত প্রিয়। অথচ বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকলে এর প্রতিবাদ করত। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এসব বিষয় তুলে ধরত।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিয়ে ভারত নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে জানিয়ে রুহুল কবির বলেন, ‘আসাম, উত্তর প্রদেশসহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় মুসলিম ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ ধারাবাহিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আপনারা সেটি বন্ধ করুন। বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিমসহ সব ধর্মের মানুষের মধ্যে যে সম্প্রীতি রয়েছে, সেটি আপনাদের কোনো অপপ্রচারে ভাঙবে না।’
ভারতে বাংলাদেশিদের চিকিৎসা বন্ধের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘তাঁরা মনে করছেন, তাঁদের হুমকিতে বোধ হয় বাংলাদেশের মানুষ অস্থির হয়ে গেছে। না, বাংলাদেশের মানুষ এখন আনন্দিত। আমাদের অনেক মেডিকেল কলেজ আছে, অনেক হাসপাতাল আছে, আপনারা কিসের অহংকার করেন? এখন বাংলাদেশের মানুষ প্রয়োজন হলে দেশেই চিকিৎসাসেবা নেবে।’
রুহুল কবির বলেন, ‘আমরা ভারতের পণ্য বর্জন করছি। কেননা তারা এই দেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেনি, তাদের বন্ধুত্ব শুধু শেখ হাসিনার সঙ্গে। সে বন্ধুত্বের জোরে শুভেন্দু ও মমতারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। ভারতের সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। দিল্লির কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্য রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করা হয়নি। দেশের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী, সহসভাপতি মো. আলী, ঢাকা জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোকাররম হোসেন ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবদলের সদস্যসচিব আতিকুল ইসলাম প্রমুখ।