রাজধানীর সদরঘাটে একটি লঞ্চের ছিঁড়ে আসা রশির আঘাতে একই পরিবারের তিনজনসহ পাঁচ যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার আবদুর রউফ (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মোহাম্মদ সেলিম হাওলাদার (৫৪), লঞ্চের পরিচালক শাহরুখ খান (৭০), তাসরিফ-৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. মনিরুজ্জামান (২৭)।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদ বলেন, ঘটনার পরই গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই পাঁচজনকে আটক করা হয়েছিল। বর্তমানে তাঁরা নৌ পুলিশের হেফাজতে আছেন। মামলাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে সদরঘাটে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক হলেন বিআইডব্লিউটিএর ক্রয় ও সংরক্ষণ বিভাগের পরিচালক রফিকুল ইসলাম। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, গতকাল সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনে এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ নামে দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। বেলা তিনটার কিছুক্ষণ আগে এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান নামের আরেকটি লঞ্চ পন্টুনে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়। এ সময় এমভি তাশরিফের রশি ছিঁড়ে লঞ্চে ওঠার জন্য পন্টুনে অপেক্ষমাণ পাঁচ যাত্রীকে আঘাত করে। এতে তাঁরা পন্টুনে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁদের পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে এক পরিবারের তিনজন রয়েছেন। তাঁরা হলেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ঘাটিচোরা গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন (৩৭), তাঁর স্ত্রী মুক্তা বেগম (২৬) এবং তাঁদের মেয়ে মাইশা (৩)। নিহত অপর দুজন হলেন পটুয়াখালীর শিখাবদি গ্রামের জয়নাল হাওলাদারের ছেলে রিপন হাওলাদার (২৭) ও ঠাকুরগাঁওয়ের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ রবিউল (১৩)।
নৌ পুলিশের সদরঘাট থানার পরিদর্শক আবুল কালাম জানান, গতকাল রাতে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।