যশোরের কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আজ সোমবার সকালে
যশোরের কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আজ সোমবার সকালে

জমির মালিকানা দাবি করে ভেঙে ফেলা হচ্ছে কেশবপুর আওয়ামী লীগের কার্যালয়

যশোরের কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। জমির মালিকানা দাবি করে কিছু ব্যক্তি ওই কার্যালয়টি ভেঙে ফেলছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই জমি তাদের। তবে ক্ষমতায় নেই বলে তাদের কিছু বলার নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি কেশবপুর-পাঁজিয়া সড়কে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত। চার শতক জমিতে নির্মিত দোতলা ভবনে চলছিল তাদের অফিস। এখানে কিছু জমি তৎকালীন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা আক্তার নাহিদ ও কেশবপুর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রেজাউল হোসেনের দখলে রয়েছে। জমির মালিকেরা বলছেন, তাঁদের ৩০ শতক জমি জোর করে দখল করে সেখানে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

কেশবপুর-পাঁজিয়া সড়কে ১৪ বছর ধরে কেশবপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছিল। এর পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরালও তৈরি করা হয়। ভবনটি নির্মাণের সময় রাতের আঁধারে সেখানে থাকা কাচা ঘরগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, সাবেক হুইপ শেখ আবদুল ওহাবসহ আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এখান থেকে দলের নানা কর্মসূচি পরিচালনা করতেন।

আজ সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের ছাদের তিন ভাগের দুই ভাগ ভেঙে ফেলা হয়েছে। জানালাগুলো ভেঙে সমান করে দেওয়া হয়েছে। ৫ আগস্টের পরেই ওই ভবন কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে দখল করা হয়। সেখানে ‘দেওয়ানি ৮১/১ মোকদ্দমা বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে ২১/০৮/২০১৬ তারিখের রায় ও ২৮/০৮/২০১৬ তারিখের মামলা ডিক্রিমূলে মরহুম আবদুল হামিদ খানের ওয়ারিশ গং এই জমির মালিক। ব্যানারটি ছেঁড়া/নষ্ট করা দণ্ডনীয় অপরাধ’—লেখাসংবলিত একটি ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মৃত আবদুল হামিদ খানের বড় ছেলে শামছুল আরেফিন খান ইউনাইটেড পিপলস পার্টির সাবেক সভাপতি। পরে শামসুল আরেফিন খান বিএনপির সংসদ সদস্য পদে যশোর-৬ আসন কেশবপুর আসন থেকে ১৯৯১ সালে নির্বাচন করে পরাজিত হন। শামছুল অরেফিন খান বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী।

কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, ২০১০ সালে আকরাম হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকায় জমি কিনে ভবন করা হয়। এর পর থেকেই ভবনের জায়গার দাবিদারেরা আদালতে মামলা করে চলেছেন। সে কারণে নামজারি করা যায়নি। তিনি বলেন, ‘জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। এরপরেও কার্যালয় ভেঙে ফেলা হচ্ছে। দল ক্ষমতায় নেই, এখন আমাদের দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।’

শামছুল আরেফিন খানের ভাই নুরুজ্জামান বলেন, ভবন ভাঙা এবং জমি উদ্ধারের বিষয়ে তিনি কোনো কিছু বলবেন না। তিনি শামছুল আরেফিন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

এ ব্যাপারে কেশবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভেঙে ফেলার ব্যাপারে তিনি মৌখিকভাবে শুনেছেন। তবে কোনো পক্ষ তাঁকে কিছু জানায়নি।