বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দেওয়ার লক্ষ্যে বেরিয়ে বাগেরহাটে বিএনপির নেতা–কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার জেলার শরণখোলা উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে খুলনা যাওয়ার পথে এসব হামলার ঘটনা ঘটে বলে দাবি বিএনপির।
আগামী শনিবার (২২ অক্টোবর) খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার ও শনিবার বাগেরহাটসহ বিভাগের অন্যান্য জেলা থেকে খুলনায় বাস চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে মালিক সমিতি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগে ভাগে খুলনা যেতে প্রস্তুতি নেয় বাগেরহাট বিএনপির নেতা–কর্মীরা।
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা বাসস্ট্যান্ড, মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাট, বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। কাউকে বাস থেকে নামিয়ে মারধর করে ফেরত পাঠানো হয়, কাউকে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকার সময় হামলা চালিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
শরণখোলা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম লাল দাবি করেন, বিকেল থেকে পথে পথে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করছে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। বিএনপি নেতা–কর্মী হিসেবে শনাক্ত করতে পারলে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে মারধর করা হচ্ছে। সরকারদলীয় নেতা–কর্মীদের হামলায় তাঁদের বেশ কয়েকজন নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন।
বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, শরণখোলার মতো জেলার অন্যান্য স্থান থেকেও খুলনা যাওয়ার পথে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতা–কর্মীকে বাস থেকে নামিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা পথে পথে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি হুমকি দিচ্ছেন। সমাবেশের দিন এলাকা ছেড়ে গেলে অবস্থা খারাপ হবে বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
শরণখোলা উপজেলা সাউথখালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক বলেন, ‘উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদের নেতৃত্বে আমাদের মারধর করা হয়। কাছে থাকা ১২ হাজার টাকা ও মূল্যবান কাগজপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আব্বাস তালুকদারের (ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক) অবস্থা গুরুতর, তাঁকে খুলনা নেওয়া লাগবে।’
জানতে চাইলে শরণখোলা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, তাঁরা কারও ওপর হামলা করেননি।
শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাইজুল ইসলাম সরদার বলেন, ‘বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীর ওপর হামলা হয়নি। এমনিই মানুষ তাদের সমাবেশে যাবে না, তাই আমাদের দোষ দিচ্ছে।’
বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মোজাফফর রহমান আলম বলেন, শরণখোলায় তাঁদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০ থেকে ১৫ জন লাঞ্ছিত এবং আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত একজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাট, বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
মোজাফফর রহমান বলেন, একদিকে দুই দিন গণপরিবহন বন্ধ রাখছে। অপরদিকে আগে যাঁরা যাচ্ছেন তাঁদের ওপর হামলা হচ্ছে। তাদের আগ্রাসী আচরণই বলে দিচ্ছে বিএনপির পক্ষে সাধারণ মানুষের যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আওয়ামী লীগ ভীত হয়ে পড়েছে।