খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে গণপিটুনিতে হ্লাচিংমং মারমা ওরফ উষা (২৫) নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলার কালাপানি স্কুলপাড়া এলাকায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত হ্লাচিংমং রামগড় উপজেলার বৈদ্যপাড়া এলাকার থৈইলাপ্রু মারমার ছেলে। তিনি ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সদস্য ছিলেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সংগঠনটি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হ্লাচিংমং সাংগঠনিক কাজে স্কুলপাড়ায় গেলে স্থানীয় লোকজন তাঁকে ধরে নির্মমভাবে মারধর করে। পুলিশ বলছে, চাঁদাবাজি করতে গেলে হ্লাচিংমং মারমাকে গণপিটুনি দেন এলাকার বাসিন্দারা।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার যোগ্যাছোলা ইউপির কালাপানি স্কুলপাড়া এলাকার বালুর পয়েন্টে ইউপিডিএফ পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে আসেন কয়েকজন। এ সময় এলাকার লোকজন তাঁদের ধাওয়া দেন। একজন মোটরসাইকেলে ও অন্যরা দৌড়ে পালিয়ে গেলেও হ্লাচিংমং মারমা গণপিটুনিতে আহত হন।
খবর পেয়ে মানিকছড়ি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসান ঘটনাস্থল গিয়ে আহত হ্লাচিংমং মারমাকে (২৮) উদ্ধারের পর সন্ধ্যা সাতটায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ সময় চিকিৎসক মহিউদ্দীন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টায় হ্লাচিংমং মারমার মৃত্যু হয়।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রাকিব উদ্দিন বলেন, মানিকছড়ি থেকে একজনকে পুলিশ নিয়ে আসে। হাসপাতালে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনচারুল করিম বলেন, চাঁদাবাজ আটক ও মারধরের খবর পেয়ে পুলিশ আহত হ্লাচিংমং মারমাকে উদ্ধার করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। এ বিষয়ে এখনো কেউ মামলা করেনি।
এদিকে এ ঘটনায় ইউপিডিএফ খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের সংগঠক অংগ্য মারমা আজ সোমবার সকালে এক বিবৃতিতে বলেন, গতকাল বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে হ্লাচিংমং মারমা সাংগঠনিক কাজে যোগ্যছোলা ইউনিয়নের স্কুলপাড়া নামক স্থানে যান। স্থানীয় লোকজন তাঁকে ধরে নির্মমভাবে মারধর করে পুলিশের কাছে তুলে দেয়। এরপর তাঁকে আহত অবস্থায় খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তিনি মারা যান। বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।