রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে প্রায় ৩৫ কেজি ওজনের একটি মহাবিপন্ন বাগাড় মাছ প্রায় অর্ধলাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে মাছটি কেনেন ঢাকার এক ব্যবসায়ী। এর আগে নিলামের মাধ্যমে ৪৫ হাজার ৫০০ টাকায় মাছটি কেনেন স্থানীয় এক মাছ ব্যবসায়ী।
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা বলেন, মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ও পাবনার জেলেরা এই অঞ্চলে নিয়মিত মাছ শিকার করেন। গতকাল রোববার সকালে নদীতে জাল ফেলে বাগাড় মাছটি পান হাবিব হালদার নামের স্থানীয় এক জেলে। পরে তা বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন দৌলতদিয়া ঘাট মাছবাজারের দুলাল মণ্ডলের আড়তে। নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ফেরিঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে কেনেন। পরে গতকাল বিকেলের দিকে ঢাকার এক ব্যবসায়ী প্রতি কেজি ১ হাজার ৪০০ টাকা দরে মোট ৪৯ হাজার টাকায় মাছটি কিনে নেন। বাগাড়টি গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর ঠিকানায় পাঠানো হয়।
তবে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, বাগাড় মাছ ধরা, শিকার ও বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। অথচ এ আইন থাকা সত্ত্বেও এটির বাস্তবায়ন না থাকায় মাছটি শিকার ও প্রকাশ্যে বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না। এর আগে গত নভেম্বর মাসে একাধিক মহাবিপন্ন বাগাড় ধরা পড়ে। এই মৌসুমে এত বড় বাগাড় এবারই প্রথম ধরা পড়ল।
এ বিষয়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকার শাকিল-সোহান মৎস্য আড়তের স্বত্বাধিকারী শাহজাহান শেখ বলেন, মৌসুমে এত বড় বাগাড় এই প্রথম ধরা পড়েছে। নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে কেনার পর ওজন দিয়ে দেখেন মাছটি প্রায় ৩৫ কেজি হয়েছে।
বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, বাগাড় মাছ ধরা, শিকার ও বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। অথচ এ আইন থাকা সত্ত্বেও এটির বাস্তবায়ন না থাকায় মাছটি শিকার ও প্রকাশ্যে বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না।
জেলার বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস জানান, বাগাড় মাছ তফসিলভুক্ত সংরক্ষিত বন্য প্রাণী। আইন অনুযায়ী, বাগাড় শিকার, ক্রয় ও বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় মাছ মহাবিপন্ন প্রাণী।
গোয়ালন্দের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজবাড়ী সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বলেন, ‘বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন, ২০১২–এর আওতাভুক্ত হওয়ায় আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। মৎস্য সংরক্ষণ আইনের আওতায় আনতে আমরা বিভিন্ন মহলে বলছি। বন বিভাগের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন।’