বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আবদুর রহিম (৬৫) নামের এক কৃষকের অণ্ডকোষ চেপে ধরে হত্যার অভিযোগে তাঁর তৃতীয় স্ত্রী বিউটি খাতুনকে (৪০) আটক করেছে পুলিশ।
আজ রোববার ঘটনার পর বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ধামাচামা গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
আবদুর রহিম উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের ধামাচামা গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীন প্রামাণিক ছেলে।
পুলিশ ও স্বজন সূত্রে জানা যায়, প্রায় ছয় বছর আগে আবদুর রহিম উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের শিয়ালি গ্রামের হাফিজুর রহমানের মেয়ে বিউটিকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। আজ রোববার সকালে আবদুর রহিম তাঁর স্ত্রীকে ভাত রান্না করতে বলেন। সময়মতো ভাত রান্না করতে না পারায় বিউটিকে মারধর করেন রহিম। মারধর থেকে রক্ষা পেতে স্বামীর অণ্ডকোষ চেপে ধরেন বিউটি। এতে ঘটনাস্থলেই রহিম মারা যান। ঘটনা দেখে স্বজনেরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিউটিকে আটক করে ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন। খবর পেয়ে বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আবদুর রহিমের লাশ উদ্ধার করে। পরে তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে (শজিমেক) মর্গে পাঠানো হয়।
আটক থাকা অবস্থায় বিউটি খাতুন বলেন, ‘ভাত রান্না করতে দেরি হওয়ায় আমার স্বামী ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে মারধর করতে আসে। এ সময় স্বামী হঠাৎ মাটিতে পড়ে গিয়ে মারা যায়। আমি তাঁর অণ্ডকোষ চেপে ধরি নাই। প্রতিবেশী লোকজন মিথ্যা সন্দেহ করে আমাকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে অন্যায়ভাবে মারধর করেছে।’
আবদুর রহিমের মেয়ে রজিনা খাতুন বলেন, তাঁর সৎমা বিউটি খাতুন আগেও তাঁর বাবার অণ্ডকোষ চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করেছেন। এবারও একই কায়দায় তাঁর বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। বিউটির নামে থানায় হত্যা মামলা করবেন তিনি।
নিমগাছি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুজাউদ্দোলা বলেন, আবদুর রহিম এর আগেও দুটি বিয়ে করেন। এর মধ্যে তাঁর প্রথম স্ত্রী মারা গেছেন। দ্বিতীয় স্ত্রীকে তিনি তালাক দিয়েছেন। প্রথম পক্ষের মেয়ে রোজিনা খাতুনকে বাড়ির পাশে বিয়ে দিয়েছেন। এরপরে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিউটিকে করেন রহিম।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত আবদুর রহিমের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে পরিবারের অভিযোগে ভিত্তিতে বিউটি খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।