ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের একটি বাড়িতে নলকূপ স্থাপনের জন্য মাটি খুঁড়ছিলেন একদল শ্রমিক। শ্রমিকদের খননকাজ যখন শেষ হওয়ার পথে, ঠিক তখন গর্তের নিচে কিছু একটার সঙ্গে হস্তচালিত খননযন্ত্রের ঠোকাঠুকির শব্দ আসে। শ্রমিকের দলটি গর্তের ভেতর থেকে একটি ছোট মাটির হাঁড়ি ওপরে তুলে আনেন। দেখা যায়, হাঁড়ির ভেতর বেশ কিছু প্রাচীন রৌপ্যমুদ্রা।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার কাকনহাটি মহল্লার বাসিন্দা মো. সবুজ মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি জানাজানি হলে সবুজের বাড়িতে লোকজনের ভিড় জমে। খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশ এসে মুদ্রাগুলো তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়। ঘটনাটি ‘গুপ্তধন উদ্ধার’ বলে এলাকায় চাউর হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, সবুজের বাড়ি থেকে ৭৭টি প্রাচীন মুদ্রা উদ্ধার করে থানায় এনে রাখা হয়েছে। মুদ্রাগুলোর ইতিহাস জানার জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মুদ্রাগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
মুদ্রাগুলোর ইতিহাস জানার জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নলকূপ বসানোর কাজে নিয়োজিত শ্রমিক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, এক থেকে দেড় ফুট গভীরতার মাটি খনন করার সময় একটি ছোট মাটির হাঁড়ির সঙ্গে খননযন্ত্রের ঠোকাঠুকি হয়। আরও খুঁড়লে তখন হাঁড়িটি দৃশ্যমান হয়। হাঁড়ি ওপরে তোলার পর অনেকগুলো রৌপ্যমুদ্রা পাওয়া যায়। মুদ্রাগুলো তাঁরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার পর এলাকায় জানাজানি হয়ে পড়ে। পরে থানা থেকে পুলিশ এসে মুদ্রাগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
বাড়ির মালিক সবুজ মিয়া বলেন, তিনি অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। আজ নলকূপ বসানোর কাজে শ্রমিকেরা মাটি খুঁড়তে গিয়ে হাঁড়িভর্তি রৌপ্যমুদ্রা পান। তখন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে বাড়িতে এসে লোকজনের ভিড় ও পুলিশ দেখতে পান। সরকারের জিনিস সরকারের লোকজন নিয়ে গেছেন, এতে তাঁর আফসাস নেই।
মহল্লার বাসিন্দা ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাশেম তালুকদার বলেন, প্রাচীন মুদ্রার বিষয়টি জানতে পেরে তিনি সেগুলা বেহাত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেন। পরে পুলিশ আসার পর সেগুলো তাঁদের হাতে বুঝিয়ে দেন। উদ্ধার হওয়া মুদ্রাগুলোর গায়ে উর্দু ও আরবি ভাষায় খোদাই করা লেখা রয়েছে। প্রত্যেক মুদ্রার ওজন প্রায় ১১ গ্রাম।