মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া দুটি গোলা পড়ল বাংলাদেশের পাহাড়ে

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া হয় গুলি ও মর্টার শেল। আজ শনিবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে শূন্যরেখার কাছাকাছি বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ১২০ মিটার ভেতরে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর দুটি গোলা এসে পড়েছে। আজ শনিবার সকালে জনবসতিহীন পাহাড়ে এ দুটি গোলা বিস্ফোরিত হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে বান্দরবানের পুলিশ সুপারের (এসপি) দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এর আগে গত ২৮ আগস্ট দুটি মর্টারের গোলা নাইক্ষ্যংছড়ির উত্তর ঘুমধুমপাড়ার জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এসে পড়েছিল। তবে গোলা দুটি বিস্ফোরিত না হওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের রেজু আমতলী সীমান্তের লোকজন জানিয়েছেন, আজ শনিবার সকাল থেকে ৪০ ও ৪১ নম্বর সীমান্ত পিলারের ওপারে (মিয়ানমার ভূখণ্ডে) ওয়ালিডং পাহাড় থেকে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি যুদ্ধ হেলিকপ্টার ওয়ালিডং পাহাড়ি এলাকায় বোমা ফেলে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বাবুল তঞ্চঙ্গ্যা প্রথম আলোকে বলেন, দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর লড়াই চলছে। বিশেষ করে রেজু আমতলী সীমান্তের কাছাকাছি ওয়ালিডং পাহাড়ে গোলাগুলি বেশি হচ্ছে। এ জন্য তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় যাঁরা জুমচাষ করছেন, তাঁরা গুলি এসে পড়ার ভয়ে জুমের কাজেও যেতে পারছেন না।

বান্দরবানের পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ৪০ ও ৪১ নম্বর সীমান্ত পিলারের মাঝামাঝি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দুটি যুদ্ধবিমান থেকে ৮-১০টি গোলা ও দুটি হেলিকপ্টার থেকে ৩০-৩৫ রাউন্ড গুলি ছুড়তে দেখা গেছে। তাদের ছোড়া দুটি গোলা ৪০ নম্বর সীমান্ত পিলারের কাছাকাছি শূন্যরেখার প্রায় ১২০ মিটার ভেতরে বাংলাদেশ অংশে এসে পড়েছে। এ ছাড়া ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৪ ও ৩৫ সীমান্ত পিলারের তুমব্রু এলাকা থেকে মিয়ানমার ভূখণ্ডে ভারী অস্ত্রের গোলাগুলি এখনো শোনা যাচ্ছে। সেখানে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশের (বিজিপি) তুমব্রু রাইট ক্যাম্প অবস্থিত। মূলত বিজিপির ওই ক্যাম্পের আশপাশে গোলাগুলি চলছে। মুরিঙ্গাঝিরি বিজিপি সীমান্তচৌকি থেকেও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বান্দরবানের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, দুটি গোলা বাংলাদেশ সীমান্তের ১২০ মিটার ভেতরে এসে পড়লেও যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার সীমানার এ পাশে আসেনি। দুটি গোলা বিস্ফোরিত হয়েছিল কিন্তু সেখানে কোনো জনবসতি নেই। তিনি বলেন, সীমান্তের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সীমান্ত এলাকার লোকজনকে সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।