গরু গোসল করাতে সোমেশ্বরী নদীতে গিয়েছিলেন মা-মেয়ে। একপর্যায়ে গরুর রশি পায়ে পেঁচিয়ে পানিতে পড়ে যায় ১০ বছরের মেয়েটি। তাকে বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দেন মা। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় মেয়ে প্রাণে রক্ষা পেলেও পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে মায়ের। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরি ইউনিয়নের কানিয়াইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নারীর নাম রেজিয়া খাতুন (৫৮)। তিনি কানিয়াইল গ্রামের আবদুল জলিলের স্ত্রী। আর জীবিত উদ্ধার হওয়া তাঁদের মেয়ের নাম মিম আক্তার (১০)। চার মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে মিম ছোট।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার আগে একটি গরু গোসল করানোর জন্য বাড়ির পাশের সোমেশ্বরী নদীতে যান রেজিয়া। এ সময় তাঁর সঙ্গে মেয়ে মিমও সেখানে যায়। নদীর তীর থেকে পানিতে নামানোর সময় গরুর গলায় বাঁধা লম্বা রশির সঙ্গে মিমের পা পেঁচিয়ে যায়। এতে শিশুটি নদীর পানিতে পড়ে যায়। এ দৃশ্য দেখে মেয়েকে বাঁচাতে পানিতে ঝাঁপ দেন মা রেজিয়া। একপর্যায়ে দুজনেই সেখানে ডুবে যায়। এ সময় আশপাশের লোকজন মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে রেজিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখানে মিম চিকিৎসাধীন আছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তানজিরুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয়রা দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে এলে একজনকে মৃত অবস্থায় পাই, যিনি মা। আর মেয়েশিশুটি হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। আগের থেকে তার শারীরিক অবস্থা এখন ভালো।’
রেজিয়ার ভাই জালাল উদ্দিন আজ সোমবার সকালে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার ভাগনি মিমকে বাঁচাতে গিয়ে পানিতে ডুবে রেজিয়ার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাতে লাশ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আনা হয়েছে। তাঁর (রেজিয়া) অন্য সন্তানেরা ঢাকায় থাকে। খবর পেয়ে তাঁরা বাড়িতে এসেছে। আজই কিছুক্ষণের মধ্যে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হবে।’