মাধ্যমিকের ফলাফল পেয়ে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুরে দিনাজপুর শহরের হলিল্যান্ড স্কুলে
মাধ্যমিকের ফলাফল পেয়ে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুরে দিনাজপুর শহরের হলিল্যান্ড স্কুলে

দিনাজপুরে এসএসসিতে পাসের হার ও জিপিএ–৫ বেড়েছে, দুটিতেই এগিয়ে মেয়েরা

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও। এবার এই বোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। অন্যদিকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজার ১০৫।

আজ রোববার দুপুরে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর সাজ্জাদ আলী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এবার এই বোর্ডে রংপুর বিভাগের আট জেলার ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১ লাখ ৯৮ হাজার ১৮৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৩৫ জন, যা শতাংশ হিসেবে ৭৮ দশমিক ৪৩। গত বছর পাসের হার ছিল ৭৬ দশমিক ৮৭। এর আগে ২০২২ সালে ৮১ দশমিক ১৬, ২০২১ সালে ৯৪ দশমিক ৮০, ২০২০ সালে ৮২ দশমিক ৭৩ এবং ২০১৯ সালে ৮৪ দশমিক ১০ শতাংশ পাস করে। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ১০৫ জন। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার ৪১০। ২০২২ সালে জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৫৮৬ জন।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এবার মানবিক বিভাগে ৯৯ হাজার ৪২২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৬৭ হাজার ৯৭৬ জন। পাসের হার ৬৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। বিজ্ঞান বিভাগে ৯৬ হাজার ১৬৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৮৫ হাজার ৩৫৯ জন। পাসের হার ৮৮ দশমিক ৭৬। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ২ হাজার ৫৯৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ২ হাজার ১০০ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৮০ দশমিক ৯৯ শতাংশ। বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭ হাজার ৭৫৪, মানবিকে ৩১০ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৪১।

এবারও এগিয়ে মেয়েরা
পাস করা পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ৯৭ হাজার ৮২২। পাসের হার ৮১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। আর ছাত্র পাসের সংখ্যা ১ লাখ ৩৬২। পাসের হার ৭৫ দশমিক ৮৫। জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রীর সংখ্যা ৯ হাজার ২৪৬ এবং ছাত্রসংখ্যা ৮ হাজার ৮৫৯। চার বছর ধরে এই বোর্ডে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় জিপিএ-৫ ও পাসের হারে এগিয়ে থাকছে মেয়েরা।

পাসের হারে এগিয়ে গাইবান্ধা
এই শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রংপুর বিভাগের আটটি জেলায় ১ লাখ ৯৮ হাজার ১৮৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৮২ দশমিক ৩৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করে প্রথম স্থানে আছে গাইবান্ধা জেলা। গত বছর এই জেলায় পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ২২ শতাংশ। ৭৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে দ্বিতীয় স্থানে আছে রংপুর জেলা। এ ছাড়া নীলফামারী জেলায় পাসের হার ৭৯ দশমিক ৪০, পঞ্চগড়ে ৭৮ দশমিক ৯২, দিনাজপুরে ৭৭ দশমিক ৮৬, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭৭ দশমিক ৬১, লালমনিরহাটে ৭৬ দশমিক ৭৩ এবং কুড়িগ্রামে পাসের হার ৭৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।

অন্যদিকে ৪ হাজার ৫০৯ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে দিনাজপুর জেলা। গত বছর এ জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪ হাজার ২৫৬ জন। এবার ৩ হাজার ৭৬৩ জন জিপিএ-৫ পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রংপুর জেলা। এ ছাড়া গাইবান্ধায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৫৮২ জন, নীলফামারীতে ২ হাজার ২১৫ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ হাজার ৯৪২, কুড়িগ্রামে ১ হাজার ৩৯১ জন, পঞ্চগড়ে ৯১০ জন এবং লালমনিরহাটে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৯৩ জন।

এবারের ফলাফলের বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর সাজ্জাদ আলী বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার পাসের হার সামান্য বেড়েছে। তবে বরাবরের মতো এবার গণিতে অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চারটি প্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থী পাস না করার বিষয়ে তিনি বলেন, ওই সব স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। খুব দ্রুতই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হবে।