চাঁদপুরসহ পাঁচ জেলার আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে একযোগে ভার্চ্যুয়ালি সভা করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সেই সভায় চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী অনুপস্থিত থাকায় চলছে নানা আলোচনা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে পাঁচ জেলার সভায় ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হন শেখ হাসিনা। চাঁদপুর জেলার সঙ্গে সংযুক্ত হয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খোঁজেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে। কিন্তু তাঁরা উপস্থিত না থাকায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও চাঁদপুর-২ আসনের নৌকার প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া দাঁড়িয়ে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এখনো সভাস্থলে (হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ) এসে পৌঁছাননি।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জনসভার আয়োজন করা হয়েছে, কিন্তু গত বুধবার বিকেলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াই চাঁদপুর-৩ (সদর ও হাইমচর) আসনের দলের প্রার্থী শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়, ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী এবং সঞ্চালক হিসেবে থাকবেন দীপু মনি—এমন ঘোষণার কারণে তাঁরা উপস্থিত হননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতা প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে সভা হয়েছে, এটি মূলত দলীয় প্রধান হিসেবে নৌকার প্রার্থীদের নিয়ে সভা ছিল। কিন্তু চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পাঁচটি আসনেই নৌকার বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। এটা সবাই জানেন। এ জন্য তাঁরা আসেননি।
তবে বিষয়টি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ ধরনের সভার আয়োজন জেলা আওয়ামী লীগ করে। তাঁরাও সেভাবেই আয়োজন করেন। গতকাল মাইকিং করে তাঁদের নামের পরিবর্তে অন্যদের নাম ঘোষণা করায় তাঁরা সভায় উপস্থিত হননি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরের পাঁচটি আসনের চারটিতেই নৌকার বিপক্ষে দলের সাতজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এতে দলের নেতা-কর্মীরাও বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এ নির্বাচনে চাঁদপুর-৩ আসন থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির অনুসারী হিসেবে পরিচিত চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক রনজিত রায় চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন ঘিরে যে যাকে ইচ্ছা সমর্থন করতে পারেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতির সভায় দলের জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আসবেন না, এটা হতে পারে না। আমি মনে করি, যাঁরা আসেননি, তাঁরা আওয়ামী লীগকে ভালোবাসেন না, দলকে ভালোবাসেন না।’
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে উদ্দেশ্যে জনসভা করেছেন, এই সভায় সেটি উপেক্ষা করা হয়েছে। দলের সবার উপস্থিত থাকার কথা। জনসভা আহ্বান করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু পরে নৌকার প্রার্থীরা বিপরীত ঘোষণা দিয়েছেন মাইকিং করে। সে জন্য আমিও ব্যক্তিগতভাবে আসিনি।’