বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে সবচেয়ে অ্যাকটিভ উপদেষ্টা হওয়ার দরকার ছিল স্বাস্থ্য উপদেষ্টার। যিনি অফিস অফিসে করবেন না, যিনি অফিস করবেন হাসপাতালে। যিনি হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে দৌড়াবেন। আমাদের জায়গা থেকে বারবার স্পষ্টভাবে বলেছি, তাঁদের আসলে যেভাবে যতটা অ্যাকটিভভাবে কাজ করার কথা, অতটুকু দেখতে পাই না।’
আজ মঙ্গলবার সকালে সাভারে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সারজিস আলম এসব কথা বলেন। সিআরপিতে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় নানা দুর্ভোগ ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর আজ তিনি চিকিৎসা কার্যক্রম দেখতে আসেন।
সারজিস আলম, ‘আমরা ছাত্র, আমাদের আর্থিক সংকট আছে। আমরা চাইলেই একটা গাড়ি সব সময় পাই না; ব্যবস্থা করতে পারি না। চাইলেই সব সময় টাকার ব্যবস্থা করতে পারি না। এখানে যাঁরা স্বেচ্ছাসেবী আছেন, তাঁরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন। তাঁরা পরিবারের সঙ্গে থাকেন না; বাইরে থাকেন। এই জিনিসগুলো (রোগীদের দুর্ভোগ) দেখে থাকতে পারেন না; বিধায় তাঁরা এসেছেন। এই কাজগুলো করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই জায়গাগুলোয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা দৌড়ে বেড়াবেন।’
হাসপাতালের পরিবেশ, রোগীদের সঙ্গে হাসপাতালের কর্মীদের খারাপ ব্যবহার ও রোগীদের খাবার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিদর্শনে আসছি শুনে বিভিন্ন জায়গায় পরিষ্কার করে স্যাভলন দিচ্ছেন। এইগুলো তো এক–দুই দিনের কাজ না। এইগুলো হতে হবে ৩৬৫ দিনের। রোগীরা তো জিম্মি হয়ে থাকতে পারেন না। স্টাফরা যাঁরা রোগীদের সঙ্গে রুট (তৃণমূল) পর্যায়ে কাজ করছেন, বিশেষ করে যাঁরা বেডশিট পরিবর্তন করেন, কাঁথা দেন, ড্রেসিংয়ের কাজ করেন, তাঁদের ব্যবহার খুবই খারাপ। তাঁরা যদি তাঁদের দায়বদ্ধতা না বোঝেন, তাহলে তাঁদের কাজ করার দরকার নেই। খাবার নিয়ে অভিযোগ দিলে এক দিন ভালো হয়; এরপর আবার আগের পর্যায়ে ফিরে যায়। এর দায় অবশ্যই এখানকার প্রশাসনকে নিতে হবে।’
সারজিস আলম আরও বলেন, অভিযোগ রয়েছে, ১৫ দিনে একজন রোগী একজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন। অথচ ভর্তি রোগীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা চিকিৎসকের দায়িত্ব। মেডিসিনের জন্য স্টাফদের বারবার বলতে হয়, রোগীকে বারবার যেতে হয়। সিআরপির মিরপুরের অবস্থা বেশ ভালো। সাভারের অবস্থা কেন এমন—বিষয়টিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের খুঁজে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সাভার সিআরপির প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহ মো. আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বীকার করছি, আমাদের এখানে সীমাবদ্ধতা আছে। তাঁরা যেসব বিষয় তুলে ধরেছেন, সেগুলোর বিষয়ে আমরা আরও সতর্ক হব। ক্লিনিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত জনবলের অভাব রয়েছে। সেটি দ্রুতই সমাধান করা হবে। রোগীদের সেবায় আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। এরপরও অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে সমাধানের উদ্যোগ নেব।’