বিদ্যুতের দাম ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর পর আরেক দফা মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা ‘গণবিরোধী ও সরকারের দায়িত্বহীন আচরণ’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতারা। দফায় দফায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে আজ শনিবার দুপুরে বগুড়া শহরের সাতমাথায় আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এ মন্তব্য করেন।
বাসদ বগুড়া জেলা শাখার সদস্যসচিব দিলরুবা নূরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা শাখার সভাপতি সাইফুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বর্মণ, সদর উপজেলার সভাপতি মাসুদ পারভেজ, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট বগুড়ার সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় বর্মণ প্রমুখ।
সমাবেশে সাইফুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, অর্থ মন্ত্রণালয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) আরেক দফা বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। এটা জনবিচ্ছিন্ন সরকারের গণবিরোধী কাজ। তিনি অভিযোগ করেন, বিদ্যুতের মুলা ঝুলিয়ে রেন্টাল, কুইক রেন্টালসহ অনেক অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে খরচ বাড়ানো হয়েছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের অহেতুক খরচ তুলতে এখন জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে। সরকারের ভুল নীতি ও দুর্নীতির দায় সাধারণ জনগণ মেনে নেবে না।
সাইফুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, ৫০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস বসিয়ে রাখা হয়েছে। এ জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এমনকি সিস্টেম লসেই বছরে অপচয় হচ্ছে তিন হাজার কোটি টাকা। সঠিক নীতি, সময়মতো রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, দুর্নীতি ও অহেতুক অপচয় কমাতে পারলে বিদ্যুতের দাম উল্টো কমে যেত।
বাসদের এই নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে যখন মানুষ দিশাহারা, তখন বিদ্যুতের দাম বাড়ালে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। কৃষি, শিল্পোৎপাদন ও সেবা খাতে খরচ বাড়বে। নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়ে যাবে। কম আয়ের মানুষ জীবনযাপনের সক্ষমতা হারাবেন। গত আগস্টে গণশুনানি না করেই জ্বালানির দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। এতে নিত্যপণ্য এখন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। নতুন করে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি মানুষকে অনাহারে মারার চক্রান্ত। এতে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়বে। এই জনবিরোধী ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিহত করতে হবে।