নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আরও দুটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তারকে (১৯) হত্যার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তাঁর ভগ্নিপতি বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। আর পারভেজ হোসেন (২৩) হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আমীর খসরু।
এ নিয়ে ছাত্র আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা করা হয়েছে, যার ১১টিতে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। ১২ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে।
বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২০ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি এলাকায় ছয়তলা ভবনের ছয়তলার ফ্ল্যাটের বারান্দায় হেলিকপ্টারের শব্দ শুনে দেখতে গেলে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে সুমাইয়া আক্তারের (১৯) মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তাঁর ছেলে অয়ন ওসমান ও ভাতিজা আজমেরী ওসমান, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান, সিটি করপোরেশনের এক নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনসহ ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে গত ১৯ জুলাই বিকেল পাঁচটার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ভুঁইগড় এলাকায় মিছিল করার সময় পারভেজ হোসেন (২৩) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তাঁর বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর মাহমুদপুর এলাকায়।
সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ১৯ জুলাই বিকেলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম ও গোলাম দস্তগীর গাজী, শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমান, শ্যালক তানভীর আহমেদসহ (টিটু) ১৭৮ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮০ জন আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। শামীম ওসমানের নির্দেশে আসামিরা ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি করেন। পারভেজ ওই স্থান অতিক্রম করার সময় অয়ন ওসমান অস্ত্র দিয়ে গুলি করেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ গিয়ে ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেন বাদী।