কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সোমবার ভোরে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। তখন পুলিশ তাঁকে ধাওয়া দেয়। পরে সকালে বাড়ির পাশে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাঁকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, জাকিরকে ধাওয়া দেওয়া বা নির্যাতন—কোনোটাই করা হয়নি।
উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের মোকাম গ্রামের বাসিন্দা নিহত জাকির হোসেন (৩৫)। তিনি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি।
নিহতের স্ত্রী পলি আক্তার বলেন, সোমবার ভোর চারটার দিকে একদল পুলিশ তাঁদের বাড়িতে গিয়ে জাকিরের নাম ধরে ডাকাডাকি করে এবং ঘরের দরজা খোলার জন্য বলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জাকির পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলে তাঁকে পুলিশ ধাওয়া করে। পরে জাকির আর ফিরে না আসায় তাঁরা (পরিবারের সদস্যরা) ভেবেছিলেন, তিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। সকালে বাড়ির অদূরে জাকিরের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় মানুষেরা পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। উপস্থিত লোকজনের সাহায্যে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সক মৃত ঘোষণা করেন। তাঁরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ সোমবার সকালেই দাফন করে ফেলেছেন।
পলি আরও বলেন, তাঁর দুই ছেলে। একজন তৃতীয় শ্রেণিতে, আরেকজন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। জাকির আগে দুইবার স্ট্রোক করেছেন। এখন জাকির চিরতরে চলে গেছেন। ছেলেদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা তিনি জানেন না।
বুড়িচং উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, রোববার রাতে দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বেশ কজন পুলিশ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেনের বাড়িতে যায়। তাঁকে ডাকাডাকি করলে তিনি ঘর থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁকে ধাওয়া করে পুলিশ। লাশের দুই হাতে হাতকড়ার দাগ রয়েছে। পুলিশের নির্যাতনে তাঁর মৃত্যু হতে পারে।
এ বিষয়ে বুড়িচং থানার দেবপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ ও পরিদর্শক জাবেদ উল ইসলাম বলেন, রাতে পুলিশ জাকিরকে গ্রেপ্তার করতে তাঁর বাড়িতে যায়। ঘরে তাঁকে না পেয়ে পুলিশ সদস্যরা চলে আসেন। তাঁকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খন্দকার বলেন, জাকির একটি মামলার সন্দেহভাজন আসামি ছিলেন। পুলিশ গিয়ে তাঁকে বাড়িতে পায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। এরপরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।