কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে হওয়া সালিসে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় তাদের থামাতে যাওয়া এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও অন্তত পাঁচজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
গতকাল রোববার রাত নয়টার দিকে উপজেলার খিলা ইউনিয়নের সাতেশ্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ সোমবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত বাবুল মিয়া (২৭) ওই গ্রামের সোলেমান মিয়ার ছেলে। বাবুলের আড়াই বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বেলা ১১টার দিকে সাতেশ্বর গ্রামের নড়াই বাড়ির পাশ দিয়ে অটোরিকশা চালিয়ে যাচ্ছিল একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে রিমন ওরফে হৃদয় মিয়া। দ্রুতগতিতে অটোরিকশা চালিয়ে যাওয়ায় ওই বাড়ির শিশুদের গায়ে ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে ওই বাড়ির বাসিন্দাসহ স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে অটোরিকশাচালক হৃদয়ের বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে হৃদয় ফেরার সময় বিষয়টি নিয়ে ওই বাড়ির লোকজনের সঙ্গে আবার ঝামেলা হয়। ঘটনাটি সমাধানের জন্য গতকাল সন্ধ্যার পর সাতেশ্বর পূর্বপাড়ার একটি দোকানের সামনে সালিস বৈঠক বসে। এ সময় ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মতিন, ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি এমরান হোসেনসহ গ্রামের মাতব্বরেরা দুই পক্ষকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু অটোরিকশাচালক হৃদয়সহ তাঁর পক্ষে থাকা রুবেল, অন্তর, সুমন, রিপন, আবদুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন এ সিদ্ধান্ত মেনে নেননি। তাঁরা অপর পক্ষের ওপর হামলা করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
একপর্যায়ে বাবুলসহ স্থানীয় লোকজন তাঁদের থামাতে গেলে হৃদয়সহ তাঁর লোকজন চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এ সময় বাবুলকে পায়ে, পিঠে ও হাতে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে লাকসাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত দুলাল মিয়া, আবদুল মান্নান, মনির হোসেন, যুবদল নেতা এমরান হোসেনসহ পাঁচজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপুল চন্দ্র দে বলেন, খবর পেয়ে রাতেই মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। অটোরিকশাচালক হৃদয়সহ তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলার করার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।